
দীর্ঘ ৪১ বছর পর ভারত আবারও কোনো নভোচারীকে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের সফল উৎক্ষেপণের পর উল্লসিত ভারতীয়রা এখন নতুন করে মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন দেখছে। এই মিশনে ভারতীয় নভোচারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা একটি বহুদেশীয় ক্রুর অংশ হিসেবে মহাকাশ যাত্রা করেছেন। তিনি এখন মহাকাশে পা রাখা দ্বিতীয় ভারতীয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (২৫ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় রাত ২টা ৩১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩১ মিনিট) অ্যাক্সিওম-৪ উৎক্ষেপণ করা হয়। মহাকাশযানটি প্রায় ২৬ ঘণ্টার মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) ডক করবে। এর পরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা নাসার এই কক্ষপথের ল্যাবরেটরিতে প্রবেশ করা প্রথম ভারতীয় হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়বেন। এর আগে ১৯৮৪ সালে নভোচারী রাকেশ শর্মা রাশিয়ান সয়ুজ মহাকাশযানে প্রথম ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে গিয়েছিলেন।
অ্যাক্সিওম-৪ মিশনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাসার সাবেক নভোচারী পেগি হুইটসন। তিনি দুবার আইএসএসের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং মহাকাশে ৬৭৫ দিনের বেশি সময় কাটিয়েছেন। অ্যাক্সিওম স্পেস নামে হিউস্টনভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থা এই বাণিজ্যিক ফ্লাইটের পরিচালনা করছে, যা নাসা, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) এবং স্পেসএক্সের একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। চার সদস্যের এই দলে শুভাংশু শুক্লা ছাড়া রয়েছেন পোল্যান্ডের স্লাওজ উজনাংশি-ভিসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু। চার দশকের বেশি সময় পর এই দুই দেশও তাদের নভোচারীদের মহাকাশে পাঠাচ্ছে।
উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা ভারতের জন্য একটি বার্তা পাঠান। তিনি বলেন, ‘৪১ বছর পর আমরা মহাকাশে ফিরেছি এবং এটি একটি অসাধারণ যাত্রা। এই মুহূর্তে আমরা প্রতি সেকেন্ডে ৭.৫ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছি। আমার কাঁধে ভারতীয় পতাকা রয়েছে। এটি শুধু আইএসএসের দিকে আমার যাত্রার শুরু নয়, এটি নতুন করে ভারতের মহাকাশযাত্রার সূচনা।’
গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার এই যাত্রা ভারতে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। ইসরো জানিয়েছে, আইএসএসে তার অর্জিত অভিজ্ঞতা ভারতের মহাকাশ কর্মসূচিতে ব্যাপক সহায়তা করবে। ৩৯ বছর বয়সী এই নভোচারী গত বছর ভারতের প্রথম মানব মহাকাশ ফ্লাইটের জন্য নির্বাচিত চারজন ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার মধ্যে ছিলেন, যা ২০২৭ সালে নির্ধারিত হয়েছে। ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপন এবং ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে একজন নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে।
মিশন পরিচালনার পাশাপাশি ভারতীয় নভোচারীর আইএসএসে দুই সপ্তাহের ব্যস্ত সময়সূচি রয়েছে। ইসরো জানিয়েছে, ফ্লাইটের প্রতি বিশাল আগ্রহের কারণে তারা মহাকাশে থাকাকালীন ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার কথোপকথন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একটি মতবিনিময়ও এই তালিকায় রয়েছে।
চার সদস্যের এই ক্রু মহাকাশে ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা পরিচালনা করবে, যার মধ্যে সাতটি ভারতের নিজস্ব। নাসার সাবেক বিজ্ঞানী মিলা মিত্র বলেছেন, ‘ইসরোর পরীক্ষাগুলো মহাকাশ এবং জীববিজ্ঞান ও মাইক্রোগ্রাভিটির ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে উন্নত করতে সাহায্য করবে। একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা মহাকাশযাত্রার ছয় ধরনের ফসলের বীজের ওপর প্রভাব যাচাই করবে। ইসরোর আরেকটি প্রকল্পে তিন ধরনের মাইক্রোঅ্যালগি (ক্ষুদ্র শৈবাল) চাষ করা হবে, যা খাদ্য, জ্বালানি বা এমনকি জীবন সহায়তা ব্যবস্থাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মাইক্রোগ্রাভিটিতে বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কোনটি, তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর লক্ষ্য হলো মহাকাশে পেশি ক্ষয় কীভাবে ঘটে এবং এর চিকিৎসা কীভাবে করা যায়, তা চিহ্নিত করা। মাইক্রোগ্রাভিটিতে কম্পিউটার স্ক্রিন ব্যবহারের শারীরিক ও জ্ঞানীয় প্রভাব নির্ধারণ করা।’
ঠিকানা/এনআই
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (২৫ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় রাত ২টা ৩১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩১ মিনিট) অ্যাক্সিওম-৪ উৎক্ষেপণ করা হয়। মহাকাশযানটি প্রায় ২৬ ঘণ্টার মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) ডক করবে। এর পরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা নাসার এই কক্ষপথের ল্যাবরেটরিতে প্রবেশ করা প্রথম ভারতীয় হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়বেন। এর আগে ১৯৮৪ সালে নভোচারী রাকেশ শর্মা রাশিয়ান সয়ুজ মহাকাশযানে প্রথম ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে গিয়েছিলেন।
অ্যাক্সিওম-৪ মিশনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাসার সাবেক নভোচারী পেগি হুইটসন। তিনি দুবার আইএসএসের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং মহাকাশে ৬৭৫ দিনের বেশি সময় কাটিয়েছেন। অ্যাক্সিওম স্পেস নামে হিউস্টনভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থা এই বাণিজ্যিক ফ্লাইটের পরিচালনা করছে, যা নাসা, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) এবং স্পেসএক্সের একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। চার সদস্যের এই দলে শুভাংশু শুক্লা ছাড়া রয়েছেন পোল্যান্ডের স্লাওজ উজনাংশি-ভিসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু। চার দশকের বেশি সময় পর এই দুই দেশও তাদের নভোচারীদের মহাকাশে পাঠাচ্ছে।
উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা ভারতের জন্য একটি বার্তা পাঠান। তিনি বলেন, ‘৪১ বছর পর আমরা মহাকাশে ফিরেছি এবং এটি একটি অসাধারণ যাত্রা। এই মুহূর্তে আমরা প্রতি সেকেন্ডে ৭.৫ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছি। আমার কাঁধে ভারতীয় পতাকা রয়েছে। এটি শুধু আইএসএসের দিকে আমার যাত্রার শুরু নয়, এটি নতুন করে ভারতের মহাকাশযাত্রার সূচনা।’
গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার এই যাত্রা ভারতে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। ইসরো জানিয়েছে, আইএসএসে তার অর্জিত অভিজ্ঞতা ভারতের মহাকাশ কর্মসূচিতে ব্যাপক সহায়তা করবে। ৩৯ বছর বয়সী এই নভোচারী গত বছর ভারতের প্রথম মানব মহাকাশ ফ্লাইটের জন্য নির্বাচিত চারজন ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার মধ্যে ছিলেন, যা ২০২৭ সালে নির্ধারিত হয়েছে। ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপন এবং ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে একজন নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে।
মিশন পরিচালনার পাশাপাশি ভারতীয় নভোচারীর আইএসএসে দুই সপ্তাহের ব্যস্ত সময়সূচি রয়েছে। ইসরো জানিয়েছে, ফ্লাইটের প্রতি বিশাল আগ্রহের কারণে তারা মহাকাশে থাকাকালীন ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার কথোপকথন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একটি মতবিনিময়ও এই তালিকায় রয়েছে।
চার সদস্যের এই ক্রু মহাকাশে ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা পরিচালনা করবে, যার মধ্যে সাতটি ভারতের নিজস্ব। নাসার সাবেক বিজ্ঞানী মিলা মিত্র বলেছেন, ‘ইসরোর পরীক্ষাগুলো মহাকাশ এবং জীববিজ্ঞান ও মাইক্রোগ্রাভিটির ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে উন্নত করতে সাহায্য করবে। একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা মহাকাশযাত্রার ছয় ধরনের ফসলের বীজের ওপর প্রভাব যাচাই করবে। ইসরোর আরেকটি প্রকল্পে তিন ধরনের মাইক্রোঅ্যালগি (ক্ষুদ্র শৈবাল) চাষ করা হবে, যা খাদ্য, জ্বালানি বা এমনকি জীবন সহায়তা ব্যবস্থাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মাইক্রোগ্রাভিটিতে বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কোনটি, তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর লক্ষ্য হলো মহাকাশে পেশি ক্ষয় কীভাবে ঘটে এবং এর চিকিৎসা কীভাবে করা যায়, তা চিহ্নিত করা। মাইক্রোগ্রাভিটিতে কম্পিউটার স্ক্রিন ব্যবহারের শারীরিক ও জ্ঞানীয় প্রভাব নির্ধারণ করা।’
ঠিকানা/এনআই