‘শাওনে ডালা’ শিল্পীদের সক্ষমতা বাড়াতে কর্মশালা

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ১২:০২ , অনলাইন ভার্সন
প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে টাঙ্গাইলের নদ-নদীতে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী লোক-উৎসব ‘শাওনে ডালা’। বহু বছর ধরে এ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চর্চা করে আসছেন স্থানীয় শিল্পীরা। এ কাজে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে দিনব্যাপী এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল।

গত ২৭ জুন শুক্রবার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হলো ‘শাওনে ডালা ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ওয়ার্কশপ ২০২৫’। এতে অংশ নেন শাওনে ডালা বা বেহুলার লাচারির আয়োজক টাঙ্গাইলের স্থানীয় দশটি দল। এগুলো হলো মনির অপেরা, ভাই-বোন যাত্রাপালা, মায়ের দোয়া যাত্রাপালা, ভাই ভাই বেহুলা পালা, সুজন বন্ধু যাত্রাপালা, একডালা যাত্রাপালা, নূরনবী যাত্রাপালা, গণেশবাবু নাট্য অভিনয় গোষ্ঠী, শাখারিয়া বেহুলার লাচারি গোষ্ঠী, লালমিয়া শিল্পসংঘ।

কর্মশালায় নিজেদের চর্চা ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন স্থানীয় লোকশিল্পীরা। পাশাপাশি নিজেদের নানা রকম সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরেন তারা। মনির অপেরার মনির জানান, এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হলে একে অর্থকরী করে তোলা প্রয়োজন। গণেশবাবু নাট্য-অভিনয় গোষ্ঠীর শিল্পীরা বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের হাতে এই ঐতিহ্য রেখে যেতে তাদের দরকার সামাজিক সমর্থণ। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে কীভাবে আরও পরিশীলিতভাবে ঐতিহ্যের ছাপ রেখে এগিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন প্রশিক্ষকেরা। 

দীর্ঘদিন ধরে এই লোকাচার নিয়ে নিবিড়ভাবে গবেষণা করে আসছেন লুবনা মারিয়াম। কর্মশালার শুরুতে তার লিখিত স্বাগত বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়। কর্মশালার উদ্বোধনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা, নৃত্যগুরু সাজু আহমেদ, শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক আফরিনা আফরোজ চৌধুরী, লোকনৃত্যভঙ্গি সংগ্রাহক কামরুল হাসান ফেরদৌস, নৃত্যশিল্পী অর্থি আহমেদ ও সংগীতশিল্পী নির্ঝর চৌধুরী। কর্মশালা চলাকালে শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করতে সেখানে উপস্থিত হন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। নিজ অঞ্চলের এই লোকচর্চায় গর্বিত বোধ করেন এই অর্থনীতিবিদ। শিল্পী ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সারওয়াত সিরাজ শুক্লা বলেন, ‘এ রকম সাংস্কৃতিক সম্পদ আছে বলেই বাঙালি আজও অন্যরকম এক সম্মান নিয়ে টিকে আছে। এ সম্পদ আমাদের আগলে রাখতে হবে।’

শাওনে ডালা শিল্পীদের পাশাপাশি কর্মশালায় অংশ নেন শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, নাট্য গবেষণাকেন্দ্র যশোর, শাহিন স্কুল অ্যান্ড কলেন জামালপুরের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা। প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শাওনে ডালা শিল্পীদের কাছ থেকে তাদের অভিজ্ঞতা জেনে নেন তারা। ইউনেস্কোর অর্থায়নে সম্মিলিতভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে ব্রতী, সাধনা, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও এলেঙ্গা রিসোর্ট। কর্মশালা পরিচালনা করেন শাওনে ডালা গবেষক লাবণ্য সুলতানা।

উল্লেখ্য পনেরো শ শতাব্দী থেকে এই অঞ্চলে শাওনে ডালা বা বেহুলার লাচারির চর্চা হয়ে আসছে। শ্রাবণ মাসের প্রথম দিন ঘট স্থাপনের মাধ্যমে এ উৎসব শুরু হয়। শ্রাবণের শেষ দিন গান ও নাটকের আবহে সাত ঘাটে মনসাকে নৈবেদ্য দেওয়ার মধ্যদিয়ে এই উৎসব শেষ হয়। এ দিন এক সপ্তম ঘাটে মঞ্চস্থ হয় বেহুলা-লখিন্দর নাট্যাংশ। এতে অংশ নেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে স্থানীয় মানুষেরা।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078