দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

সুরাহা হয়নি মার্কিন শুল্ক ইস্যুর

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ২৩:১০ , অনলাইন ভার্সন
একের পর এক দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ শুল্কের অতিরিক্ত আরও ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক  কমানোর বিষয়ে দর-কষাকষি করতে বাণিজ্য উপদেষ্টা, বাণিজ্য সচিবসহ উচ্চপর্যায়ের একটি দল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করেন। কিন্তু সেখানে কোনো সুরাহা হয়নি বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
দেশে ফিরে ১৪ জুলাই সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করেন পাল্টা শুল্ক চুক্তির খসড়া নিয়ে। বৈঠক শেষে ট্রাম্পের শুল্ক ইস্যুতে সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টাকে। কেন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি, যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া কী, চুক্তির শর্তে কী কী বিষয় রয়েছে, বাংলাদেশ নেগোশিয়েশনে কোথায় কোথায় ছাড় দিতে পারছে না, নেগোশিয়েশন কতটুকু সফল হলো বা আমেরিকার চাওয়া পূরণ করতে গিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে সংকট তৈরির শঙ্কা রয়েছে কি না, এসব বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চান। তবে এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা কোনো উত্তর দেবেন না বলে জানিয়ে দেন।
এই বৈঠকের পর একই দিন এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় দফার আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আলোচনার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আশা করছি, যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক শুল্কহার নির্ধারণ করবে। আর বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দিয়ে মার্কিন বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে।’ দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হয়েছে গত ১১ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে উপদেষ্টা বিস্তারিত কিছু জানাননি। কারণ, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ বিষয়ে একটি ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ বা গোপনীয়তা চুক্তি রয়েছে।
সূত্র জানায়, শুল্ক চুক্তির শর্তে শুধু বাণিজ্য ইস্যুই নয়, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু নন-ট্যারিফ ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়েছে। এর মধ্যে জিও-পলিটিক্যাল প্রসঙ্গ এবং বিশেষ কিছু দেশের সঙ্গে বিনিয়োগ বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রাধান্য না দেওয়ার জন্যও চাপ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এসব শর্ত আসলে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেছে, যা সরকার এখন না পারছে মানতে, না পারছে বলতে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অভিঘাত হতে পারে। তাই সরকার সর্বোচ্চ স্তর থেকে বিষয়টি দেখছে এবং কিছু পদক্ষেপ এরই মধ্যেই নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু করতে হবে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কৌশল নেওয়া হবে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘মার্কিন পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আমরাও আশাবাদী।’
তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন, শুল্ক ও শুল্কের বাইরের অনেক ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে প্যাকেজ আলোচনা করতে চায় মার্কিন সরকার। অর্থাৎ ট্যারিফের বাইরেও অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওয়াশিংটনের বৈঠকে। তবে আমরা আশাবাদী, সরকার যে পথে বা যেভাবে আলোচনা এগিয়ে নিচ্ছে, তাতে ভালো কিছু অর্জন করা যাবে। একই সঙ্গে আমি পরামর্শ দিয়েছি শুল্ক-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশ সরকার যেন লবিস্ট নিয়োগ দেয়। উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখে তা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। তবে ৮ জুলাই বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে ১ আগস্ট থেকে। এই অবস্থায় অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে পৌঁছেছে। বাংলাদেশও সে উদ্যোগ নিয়েছে। ইউএসটিআরের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে একাধিক দফায় বৈঠক হয়েছে, যদিও এখনো দুই দেশ সব বিষয়ে একমত হতে পারেনি। বাংলাদেশ আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছে একতরফা এই শুল্ক আরোপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078