কেন এই দুর্ভাবনা

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩০ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি জরিপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক মানুষই নিজেদের নিরাপত্তাহীন ভাবে। এই অর্ধেকের মধ্যে আবার নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি। বিবিএসের জরিপ : ‘নিজেকে নিরাপত্তাহীন ভাবে অর্ধেক মানুষ।’ দেশের বহুবিধ পরিস্থিতির কারণে নিরাপত্তাহীনতার এই শঙ্কা। আবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এই জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশির ভাগই নারী। জরিপটি ঢাকা থেকে পাঠানো হয়েছে এবং সেটা প্রকাশিত হয়েছে ঠিকানার ২ জুলাই সংখ্যায়। জরিপে বলা হচ্ছে, বহুবিধ কারণ রয়েছে এই ভাবনার পেছনে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কারণ যার অন্যতম। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বেহাল পরিস্থিতি এবং সেই সঙ্গে নানা রকম সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে দিনাতিপাত করতে হয়।

নিজের এবং পরিজনের জীবন, ধন-সম্পদ, মূল্যবান স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, বসতবাড়ি কোনো কিছুরই নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়। সংস্কৃতির কত যে রূপবদল ঘটছে প্রতিনিয়ত, তার সঙ্গে মানুষের পূর্বপরিচয় ছিল না মোটেও। এখন নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে নতুন করে পরিচয় ঘটছে আর মানুষ খাবি খাচ্ছে। বিবিএসের জরিপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাগরিক অভিমত’ বা ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে’। জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে জরিপটি করা হয়, যা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা হয়েছে গত ১৯ জুন। জরিপের ফল সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, জরিপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যে তথ্য দিয়েছেন, তা-ই শুধু তুলে ধরা হয়েছে। এখানে জরিপ পরিচালনাকারীদের নিজস্ব কোনো মতামত নেই। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশের পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়ে। যেসব দাবি ও আকাক্সক্ষা নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থান ঘটে, সেসব দাবি ও প্রত্যাশা পূরণ করার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ৮ আগস্ট নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে আসীন হওয়ায় দেশের গরিষ্ঠ মানুষের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। তারা কায়মনোবাক্যে প্রত্যাশা করতে শুরু করেÑ‘এবার হবে, নিশ্চয় হবে। এবার মানুষের স্বপ্ন নিশ্চয় পূরণ হবে।’ কিন্তু শুরু থেকেই সরকারকে ভিন্ন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠতে দেখা গেল। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নজর দেওয়া গুরুত্ব হারায়। ফলে দেশের ভেতরে গোলযোগ, বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। রাস্তাঘাটে, সমাবেশে এমনকি নিজ গৃহেও মানুষ সহিংসতার শিকার হতে থাকে। যেখানে সেখানে ঘটতে থাকে বিশৃঙ্খলা। এর সঙ্গে শুরু হয় নতুন এক সহিংসতা ‘মব সংস্কৃতি’। কেউ কেউ একে প্রেশার গ্রুপ পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এই প্রেশার গ্রুপের প্রেশারে সর্বত্র ভয়ের রাজত্ব কায়েম হতে থাকে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, চলমান জনতার ওপর হঠাৎ আক্রমণে দেশের সব শৃঙ্খলা, মূল্যবোধ ভেঙে পড়তে থাকে। অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘আগে ছিল মগের মুল্লুক, এখন চলছে মবের মুল্লুক।’
মানুষের জীবন এসব সন্ত্রাসে ওষ্ঠাগত। সবাই দেশের এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে চায়। সবাই চায় দেশের এই পরিস্থিতির অবসান ঘটুক। সবাই জীবনের পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে চলতে চায়। এই চাওয়াটা যেকোনো স্বাধীন দেশের মানুষের ন্যায্য চাওয়া। আশা করি, সরকার আন্তরিকভাবে পরিস্থিতির গভীরতা অনুভব করবে এবং সেই মতো ব্যবস্থা নিয়ে জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078