বাংলাদেশের আকাশ সকলের শঙ্কামুক্ত হোক

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৪ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশে কবে কখন নির্বাচন হবে, সুনির্দিষ্ট করে কারও পক্ষে বলার সাধ্য নেই। ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে যে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে, সেটাও নানা ‘ইফ’, ‘যদি’ বা নানা চক্রে টানাপোড়েন চলছে। নির্বাচন গণতন্ত্রের একমাত্র চাবিকাঠি না হলেও অন্যতম একটি শর্ত। নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয়; যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ তাদের নিজেদের স্বাধীন মত ও আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করতে না পারে এবং সে কারণে নাগরিক ভোটে নির্বাচিত হয়েও যদি অন্য কোনো কারচুপি ও চক্রান্তে ফলাফলে অন্য কাউকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়; তবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় দেশের মানুষের আন্দোলন ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

গণতন্ত্র ব্যতিরেকে দেশে ভালো কিছু করার সুযোগও নেই। গণতন্ত্রের শত দোষত্রুটি থাকলেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আর কোনো উত্তম ব্যবস্থা উদ্ভাবন করতে সক্ষম হননি। সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সর্বোত্তম ব্যবস্থা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। তাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে পরিচালিত দেশগুলোতে সেই গণতন্ত্র অধরা থাকলে নানা উপসর্গ দেখা দিতে থাকে, যা রাষ্ট্রের কল্যাণে না এসে অকল্যাণ বাসা বাঁধে রাষ্ট্রযন্ত্রে। বিভিন্ন ঝুঁকিতে রাষ্ট্রের পড়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা দেখা দেয়।

গণতন্ত্রের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে যে টালবাহানা শুরু হয়েছে, তাতে রাষ্ট্র ও সমাজে অস্থিরতা ঘিরে ধরবে, তা আগাম বলে দেওয়া যায়। ‘মুরগি আগে না ডিম আগে’ কিংবা ‘উন্নয়ন আগে না গণতন্ত্র আগে’ এই বিতর্কের মতো যদি ‘নির্বাচন আগে না সংস্কার আগে’ এ বিতর্কই করতে থাকি, তবে নির্বাচন ও সংস্কার কোনোটারই কোনো সুরাহা হবে বলে মনে হয় না। সংস্কার একটি চলমান বিষয়। তবু গত এক বছরে সংস্কারের যে দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে হাজির আছে, তাতে মনে হয়, ‘আশি মণ তেল জোগাড় হবে না, রাধাও নাচবে না’ অবস্থা।

‘নির্বাচন আগে না সংস্কার আগে’, এই বিতর্ক চলার মধ্যেই দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নানা মহলে এরই মধ্যে উত্তেজনা ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যত দিন যাবে এই উত্তেজনা, শঙ্কা আরও ছড়িয়ে পড়বে এবং গভীর হচ্ছে। দেশে রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিদিন সব মিডিয়ায় যেসব লেখালেখি প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে হতাশাই ব্যক্ত হবে। ‘অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানি’ শিরোনামে যে খবরটি ঠিকানার ২ জুলাই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে, তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা না হলেও নির্বাচন নিয়ে বিদ্যমান সংশয়, শঙ্কার অনেকটা অবসান হয়েছে। তবে নির্বাচন সবার প্রত্যাশিত সর্বদলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে না। দেশের মোট ভোটারের ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটারের অংশগ্রহণে ভোট হবে। ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোটারের নির্বাচনের বাইরে থেকে যাওয়ার সমূহ শঙ্কা রয়েছে।’

সবচেয়ে শঙ্কার দিক হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ পর্যন্ত কত দিনে শেষ হয়, তা নিয়ে জনমনের সংশয়। এ সংশয় বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষ যারা রাজনীতি নিয়ে অতটা মাথা ঘামায় না, তারাও এখন এ রকম সংশয়ে আক্রান্ত হচ্ছে।

যে বহিঃশক্তির হাতে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ, তারাও জনতার শক্তির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীসহ আর দু-একটি নতুন দলকে রাজনীতিতে স্থায়িত্ব দিতে চায়। বাংলাদেশে, তারা আর একক কোনো জাতীয়তাবাদী শক্তি রাজত্ব করুক, তা চায় না। সেই সঙ্গে বাইরের শক্তির কোনো কোনো অংশ এসবের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পুনরুত্থানও চায়। সবকিছু মিলিয়ে রাজনীতির আকাশ বাংলাদেশে মেঘাচ্ছন্ন। এখন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। কখন যে বজ্রপাত ঘটে, কেউ বলতে পারছে না।
তবে বহিঃশক্তির কেউ কেউ বা দেশীয় শক্তির কোনো কোনো অংশ বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশ এমন মেঘাচ্ছন্ন কামনা করলেও সাধারণ মানুষ চায় শঙ্কার সব মেঘ কেটে যাক। বাংলাদেশে রাজনীতির স্থিতি ফিরে আসুক। কোনো শঙ্কার মধ্যে যেন তাদের জীবনযাপন করতে না হয়।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078