সাগরিকার জোড়া গোলে জয়ে শুরু বাংলাদেশের

প্রকাশ : ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২৩:০০ , অনলাইন ভার্সন
রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর মাটিতে নুয়ে পড়লেন মোসাম্মৎ সাগরিকা। খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছিল তাকে। ভাগ্যিস, ম্যাচ শেষে ক্লান্তির ছাপ দেখা গেল। পুরো ম্যাচে অবশ্য ক্লান্ত মনে হয়নি তাকে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে গেছেন ছন্দ ধরে রেখে। তার জোড়া গোলে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপে বাছাইপর্ব জয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ।

লাওসের জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার (৬ আগস্ট) স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব-২০ সাফ যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই যেন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শুরুটা করলেন সাগরিকা। সাফে ৩ ম্যাচে ৮ গোল করা এই ফরোয়ার্ডকে ঘিরেই যে জয়ের ছক কষেছিলেন কোচ পিটার বাটলার। সাগরিকা ছাড়াও গোলের খাতায় নাম লেখান মুনকি আক্তার।

নারী ফুটবল র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১২৮) চেয়ে ২১ ধাপ এগিয়ে রয়েছে লাওস (১০৭)। কিন্তু মাঠের খেলায় আবারও দাপট দেখাল বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের প্রথম মিনিটে পাওয়া কর্নার সেই বার্তাই দিয়েছে।

স্বপ্না রানীর সেট পিস থেকে তৃষ্ণা রানীর হেড সহজে তালুবন্দী করেন লাওস গোলরক্ষক থংসামুদ ভংখামফান। বৃষ্টিভেজা মাঠে বল টেনে নিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছিল। ষষ্ঠ মিনিটে স্বপ্নার ফ্রি-কিক খুঁজে পায়নি লক্ষ্য। ১১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে স্বপ্নার চেষ্টা বিফলে যায় আবারও।

একই মিনিটে লাওসের পাল্টা আক্রমণে বড় বিপদের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। আন্না কেও ওনসির শট বাংলাদেশের গোলরক্ষক স্বর্ণা রানী মণ্ডল ঠেকিয়ে দিলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বল চলে যায় কেমি উদমসুকের কাছে। তার শট প্রতিরোধ করেন আফঈদা খন্দকার।

১২ মিনিটে শান্তির ক্রস কোথাও যাওয়ার আগে আটকে দেন থংসামুদ। ১৪ মিনিটে সিনহা জাহান শিখার পাস থেকে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তৃষ্ণা। ১৫ মিনিটে শিখা নিজে চেষ্টা করেন গোলের জন্য। কিন্তু পরাস্ত করতে পারেননি গোলরক্ষককে।

১৭ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে এগিয়ে বাংলাদেশের গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন ভানভালি বুনলামি। কিন্তু তার কোনাকুনি শট খুঁজে পায়নি লক্ষ্য। আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণে বেশ ভালোই জমে ওঠে খেলা।

১৮ মিনিটে পূজা দাসের দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন লাওস গোলরক্ষক। এরপর বেশ কিছুটা সময় দুই দল লড়তে থাকে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণে। ৩৬ মিনিটে বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটি এনে দেন সাগরিকা। শান্তি মার্দির কর্নার থেকে তার হেড গোলরক্ষকের হাত ফাঁকি দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে। বাংলাদেশও মেতে ওঠে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে।

৪১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শিখার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে না এলে ব্যবধান দ্বিগুণ হতো বাংলাদেশের। তবে বিরতিতে যায় স্বস্তি নিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্মক খেলা বজায় রাখে বাংলাদেশ। ৫৭ মিনিটে স্বপ্নার দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন লাওস গোলরক্ষক। কিন্তু ঠিক পরের মুহূর্তে স্বাগতিকদের হতাশ হতে হয় আবারও। ৫৮ মিনিটে তৃষ্ণার দারুণ এক পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন মুনকি আক্তার। লাওসের অধিনায়ক নিতজা সুমালুকে কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান এই মিডফিল্ডার। সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে আর কোনো ভুল করেননি তিনি। কোনাকুনি শটে গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে জালে ফেলেন বল। ব্যবধান দ্বিগুণ হওয়ার আনন্দে তাকে জড়িয়ে ধরে উদ্‌যাপন করেন সাগরিকা।

৭১ মিনিটে সুযোগ আসে লাওসের সামনে। স্বর্ণাকে একা পেয়ে যান ওনসি। দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে প্রতিরোধ করেন স্বর্ণা। বাংলাদেশকে রক্ষা করেন গোল হজম করা থেকে। ৭২ মিনিটে আবারও বাংলাদেশের বাধা হয়ে দাঁড়ায় বার। স্বপ্নার ক্রসে সাগরিকার হেড ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে।

৭৬ মিনিটে শিখার বাঁ পায়ের শট ঠেকিয়ে দেন লাওস গোলরক্ষক। ৮৭ মিনিটে স্বস্তি খুঁজে পায় লাওস। বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের ওপরে ওঠার সুযোগ নেন ওনসি। বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে ব্যবধান কমান তিনি।

সেই স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ব্যবধান ৩-১ বানিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সাগরিকা দেখা পান তার দ্বিতীয় গোলের। বক্সের ভেতর থেকে মুনকি কাটব্যাক করেন তৃষ্ণার উদ্দেশে। বল পেয়ে সাগরিকাকে পাস দেন তৃষ্ণা। সাগরিকাও কোনো ভুল করেননি। দ্রুত বাঁ পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড। তাতে বাংলাদেশ মাঠ ছাড়ে জয়ের আনন্দ নিয়ে।

একই স্টেডিয়ামে গ্রুপের অপর ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৯-০ গোলে হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। ৮ আগস্ট পরের ম্যাচে পূর্ব তিমুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

ঠিকানা/এনআই
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078