
গ্রাম-বাংলার গল্পে, কাহিনিতে গোপাল ভাঁড়ের গল্প প্রায়ই শোনা যায়। আমি নিজেও গোপাল ভাঁড়ের গল্প শুনেই বড় হয়েছি। গোপাল ভাঁড়ের বুদ্ধিদীপ্ত গল্পগুলো শুধু হাস্যকরই নয়, শিক্ষণীয় বটে!
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলা সাহিত্যে গোপাল ভাঁড়ের নাম সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। তার আসল নাম গোপাল চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি ছিলেন সৎ ও বুদ্ধিমান।
কথিত আছে, কৃষ্ণনগরের উত্তর দিকে ঘূর্ণি নামের এক গ্রামে গোপাল ভাঁড়ের জন্ম। গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি নিয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়, তিনি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে থাকতেন। আর্থিকভাবে অসচ্ছল থাকার কারণে তার লেখাপড়া করার সুযোগ হয়নি। কিন্তু অল্প শিক্ষা আর নিজের অসীম বুদ্ধি ও প্রতিভার গুণেই তিনি আজও বাচ্চা-বুড়ো সকলের মনে স্থান করে নিয়েছেন। গোপালের যখন মাত্র নয় বছর বয়স, তখন তার বাবা মারা যান এবং তার মা স্বামীর চিতায় সহমরণে আত্মাহুতি দেন। তার বড় ভাইকে দাসত্বে বাধ্য করা হয় এবং তাকে একটি ডাকাতদল অপহরণ করে। অবশেষে একজন ভদ্রমহিলা তাকে লালন-পালন করেন এবং যৌবনে গোপাল পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর রাজদরবারে ভাঁড় হিসেবে নিযুক্ত হন।
কথায় বলে, নাপিতরা ধূর্ত হয়। গোপালরা জাতিতে নাপিত ছিলেন। গোপাল অসম্ভব ধূর্ত ছিলেন কিন্তু তাকে কখনোই নাপিত বলা চলে না। তার অসম্ভব বুদ্ধিমত্তা তাকে শ্রেষ্ঠ ভাঁড়রূপে পরিচিতি দিয়েছে। তাই তিনি গোপাল ভাঁড়।
গোপাল ভাঁড় ছিলেন হিন্দুধর্মের অনুসারী। নদীয়ার সম্রাট মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নানা লোকের মুখে গোপালের রসিকতা ও বুদ্ধিসত্তার কথা শুনে তাকে রাজসভায় স্থান দিয়েছিলেন। সেই থেকে গোপালের পরিচিতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তার অসামান্য অবদানের জন্য রাজা ও রানি উভয়েই তাকে পছন্দ করতেন। বুদ্ধি ও সৎ সাহস থাকার কারণে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাকে তার সভাসদদের মধ্যকার নবরত্নদের একজন বা বিশেষ সভাসদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সেই আমলে রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের প্রাসাদের সামনে নির্মিত তার একটি ভাস্কর্য এখনো অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তী সময়ে কৃষ্ণনগর পৌরসভার সীমানায় ঘূর্ণিতে গোপাল ভাঁড়ের নতুন মূর্তি স্থাপিত হয়েছে।
তবে গোপাল ভাঁড়ের নাম ইতিহাসের কোথাও উল্লেখ নেই। তার অস্তিত্ব আদৌ ছিল কি না, এ বিষয়ে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। কিন্তু একটি উৎসে পাওয়া গেছে, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং শহরের সুরক্ষা ইনচার্জ শঙ্কর তরঙ্গের একজন সম্মানিত ও পুরোনো দেহরক্ষী ছিল, যাকে তার সাহস ও জ্ঞানের জন্য রাজা বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন এবং সম্ভবত এটিই গোপাল ভাঁড়ের কিংবদন্তির জন্ম দিয়েছিল। তার অস্তিত্ব নিয়ে অনেক পরস্পরবিরোধী মতামত থাকলেও তার গল্পগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে এবং তাকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই।
আচার্য সুকুমার সেন অভিমত দেন, ‘গোপাল চরিত্রটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। তবে কিছু সূত্র দাবি করেছে যে গোপাল একজন সত্যিকারের চরিত্র ছিল।’
গোপাল ভাঁড়ের ফাঁসি হওয়ার ঘটনাটি মূলত একটি লোককাহিনি এবং এর ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিংবদন্তি অনুসারে, নবাব সিরাজউদ্দৌলার দরবারে গোপাল ভাঁড় তার হাস্যরসের মাধ্যমে সকলের মনোরঞ্জন করতেন। একবার তিনি নবাবের সভাসদদের নিয়ে একটি কৌতুক করেন, যা নবাবের অপছন্দ হয় এবং এর ফলস্বরূপ নবাব তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে এই ঘটনার ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। অনেক ইতিহাসবিদের মতে, তার ফাঁসির ঘটনাটি নিছকই একটি গল্প। গোপাল ভাঁড়ের বংশধর বলতে সাধারণত তার সৃষ্ট গল্প ও কৌতুকগুলোর মাধ্যমেই তার স্মৃতি বহন করা হয়। তার গল্পগুলো আজও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তা ছাড়া গোপাল ভাঁড় নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের মানুষের কাছে আজও পরিচিত।
গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলো কোনো একক ব্যক্তির লেখা নয়। এটি লোকশ্রুতি এবং লোককথার মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। তার গল্পগুলো আজও মানুষের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ করে, বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে এই চরিত্রটি বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলা সাহিত্যে গোপাল ভাঁড়ের নাম সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। তার আসল নাম গোপাল চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি ছিলেন সৎ ও বুদ্ধিমান।
কথিত আছে, কৃষ্ণনগরের উত্তর দিকে ঘূর্ণি নামের এক গ্রামে গোপাল ভাঁড়ের জন্ম। গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি নিয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়, তিনি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে থাকতেন। আর্থিকভাবে অসচ্ছল থাকার কারণে তার লেখাপড়া করার সুযোগ হয়নি। কিন্তু অল্প শিক্ষা আর নিজের অসীম বুদ্ধি ও প্রতিভার গুণেই তিনি আজও বাচ্চা-বুড়ো সকলের মনে স্থান করে নিয়েছেন। গোপালের যখন মাত্র নয় বছর বয়স, তখন তার বাবা মারা যান এবং তার মা স্বামীর চিতায় সহমরণে আত্মাহুতি দেন। তার বড় ভাইকে দাসত্বে বাধ্য করা হয় এবং তাকে একটি ডাকাতদল অপহরণ করে। অবশেষে একজন ভদ্রমহিলা তাকে লালন-পালন করেন এবং যৌবনে গোপাল পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর রাজদরবারে ভাঁড় হিসেবে নিযুক্ত হন।
কথায় বলে, নাপিতরা ধূর্ত হয়। গোপালরা জাতিতে নাপিত ছিলেন। গোপাল অসম্ভব ধূর্ত ছিলেন কিন্তু তাকে কখনোই নাপিত বলা চলে না। তার অসম্ভব বুদ্ধিমত্তা তাকে শ্রেষ্ঠ ভাঁড়রূপে পরিচিতি দিয়েছে। তাই তিনি গোপাল ভাঁড়।
গোপাল ভাঁড় ছিলেন হিন্দুধর্মের অনুসারী। নদীয়ার সম্রাট মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নানা লোকের মুখে গোপালের রসিকতা ও বুদ্ধিসত্তার কথা শুনে তাকে রাজসভায় স্থান দিয়েছিলেন। সেই থেকে গোপালের পরিচিতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তার অসামান্য অবদানের জন্য রাজা ও রানি উভয়েই তাকে পছন্দ করতেন। বুদ্ধি ও সৎ সাহস থাকার কারণে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাকে তার সভাসদদের মধ্যকার নবরত্নদের একজন বা বিশেষ সভাসদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সেই আমলে রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের প্রাসাদের সামনে নির্মিত তার একটি ভাস্কর্য এখনো অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তী সময়ে কৃষ্ণনগর পৌরসভার সীমানায় ঘূর্ণিতে গোপাল ভাঁড়ের নতুন মূর্তি স্থাপিত হয়েছে।
তবে গোপাল ভাঁড়ের নাম ইতিহাসের কোথাও উল্লেখ নেই। তার অস্তিত্ব আদৌ ছিল কি না, এ বিষয়ে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। কিন্তু একটি উৎসে পাওয়া গেছে, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং শহরের সুরক্ষা ইনচার্জ শঙ্কর তরঙ্গের একজন সম্মানিত ও পুরোনো দেহরক্ষী ছিল, যাকে তার সাহস ও জ্ঞানের জন্য রাজা বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন এবং সম্ভবত এটিই গোপাল ভাঁড়ের কিংবদন্তির জন্ম দিয়েছিল। তার অস্তিত্ব নিয়ে অনেক পরস্পরবিরোধী মতামত থাকলেও তার গল্পগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে এবং তাকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই।
আচার্য সুকুমার সেন অভিমত দেন, ‘গোপাল চরিত্রটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। তবে কিছু সূত্র দাবি করেছে যে গোপাল একজন সত্যিকারের চরিত্র ছিল।’
গোপাল ভাঁড়ের ফাঁসি হওয়ার ঘটনাটি মূলত একটি লোককাহিনি এবং এর ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিংবদন্তি অনুসারে, নবাব সিরাজউদ্দৌলার দরবারে গোপাল ভাঁড় তার হাস্যরসের মাধ্যমে সকলের মনোরঞ্জন করতেন। একবার তিনি নবাবের সভাসদদের নিয়ে একটি কৌতুক করেন, যা নবাবের অপছন্দ হয় এবং এর ফলস্বরূপ নবাব তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে এই ঘটনার ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। অনেক ইতিহাসবিদের মতে, তার ফাঁসির ঘটনাটি নিছকই একটি গল্প। গোপাল ভাঁড়ের বংশধর বলতে সাধারণত তার সৃষ্ট গল্প ও কৌতুকগুলোর মাধ্যমেই তার স্মৃতি বহন করা হয়। তার গল্পগুলো আজও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তা ছাড়া গোপাল ভাঁড় নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের মানুষের কাছে আজও পরিচিত।
গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলো কোনো একক ব্যক্তির লেখা নয়। এটি লোকশ্রুতি এবং লোককথার মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। তার গল্পগুলো আজও মানুষের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ করে, বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে এই চরিত্রটি বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।