ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার মেঘ কাটছে

প্রকাশ : ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১৪:২৬ , অনলাইন ভার্সন
রাজনীতিতে নানা সমীকরণ। দোদুল্যমান পরিস্থিতি। মতানৈক্য। কেউ প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট চান, কেউ সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে। আবার কারও দাবি সংস্কারের আগে নির্বাচনে না যাওয়া। তার মাঝে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মতো বড় শঙ্কা তো আছেই। এসব শঙ্কা, সংশয় আর উৎকণ্ঠার মধ্যেই নির্বাচনের পথে হাঁটছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে প্রস্তুত রোডম্যাপও। চলতি সপ্তাহেই তা ঘোষণা করবে ইসি। ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, নির্বাচনী রোডম্যাপের সব কটি বিষয় সমন্বয়ের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে খসড়ার কাজও শেষ হয়েছে।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন বা সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য এখন চরমে। বিএনপি বাদে অন্য বড় দলগুলো জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না হলে নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখছে। তবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মতৎপরতায় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার মেঘ কাটতে শুরু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরাও মনে করছেন, নির্বাচনে দর-কষাকষির অংশ হিসেবেই কিছু দাবি সামনে আনা হচ্ছে। মূলত বিএনপিকে নির্বাচনী সমঝোতায় নিয়ে আসতেই নির্বাচন বর্জনের কথা বলছে জামায়াতসহ দলগুলো।
নির্বাচন আয়োজন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। এখানে কোনো শক্তি নেই নির্বাচনকে দেরি করবে। চিফ অ্যাডভাইজর বলেছেন, এরপর ইলেকশন কমিশনও বলেছে। আমাদের পুরো জাতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রেস সচিব বলেন, আমাদের সরকারের যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে, ইলেকশন নিয়ে যারা কাজ করে সবাই পুরোদমে কাজ করছে। ইলেকশন ফেব্রুয়ারিতে হবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যারা সন্দেহের বীজ রোপণ করছেন তাদের বলব, আপনারা থামেন। রোজা শুরু হওয়ার আগেই ইলেকশন হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত সময় থেকে পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই। নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের, দলের নয়। আমাদের যত ধাপ আছে সবকিছুই আমরা মাথার মধ্যে এটাই রাখছি, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, আমরা ফেব্রুয়ারিতে চলে যাব।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করেছেন, সেই তারিখ অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। স্যারের কথার ওপরে আমাদের কোনো কথা নেই। আর জনগণ নির্বাচনমুখী হলে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই।’ তার মতে, ক্ষমতা জনতার হাতে, জনগণ যদি নির্বাচনমুখী হয়, তাহলে নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না।
পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না-এটি কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্য। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে নির্বাচন বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়। তারা হয়তো কোনো না কোনো কারণে নিজের কথাগুলো ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে, যাতে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যায় অথবা বানচাল করা যায় অথবা নির্বাচন অনুষ্ঠান না হোক, সেটা চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। দেশ এখন নির্বাচনের ট্রেনে আছে। এটা কেউ থামাতে পারবে না।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে বিরোধের নেপথ্যে দর-কষাকষি না অন্য কিছু- এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। অনেকে বলছেন, নির্বাচন নিয়ে বিরোধিতার পেছনে বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল হলেও আদতে আগামী দিনের সরকারে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর অংশগ্রহণের বিষয়টিও আলোচনা আছে। তাদের মতে, মূলত এনসিপি ও জামায়াত চাইছে, বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি করে ভোটের মাঠে আকাক্সিক্ষত সুযোগ তৈরি করে নেওয়া।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আগামী দিনে জনগণের ভোটে বিএনপি সরকার গঠন করতে সক্ষম হলে একটি সম্মিলিত জাতীয় সরকার গঠনের সম্ভাবনার কথা এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন তারেক রহমান। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে জামায়াত ও এনসিপিকে রাখার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবি করে দায়িত্বশীল সূত্র।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, সংশয় বা অনিশ্চয়তা থাকলেও নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিক সরকার। তাই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, সব দলেরই নিজস্ব কৌশল থাকতে পারে। মতপার্থক্যও থাকবে। তাই বলে নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করা গণতান্ত্রিকসুলভ আচরণ নয়। এই মুহূর্তে সবাইকে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সমীচীন বলে মনে করেন তিনি।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078