ভারতীয় সেনাদের চলে যেতে বলবেন মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১৩ , অনলাইন ভার্সন
দেশ থেকে ভারতীয় সেনাদের চলে যেতে বলবেন মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত মোহামেদ মুইজু। তিনি বলেছেন, মালদ্বীপের মাটিতে আমরা কোনো বিদেশি সেনা পা রাখুক এটা দেখতে চাই না। দেশের জনগণের কাছে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবো। গত মাসে তিনি দ্বীপরাষ্ট্রটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। বলেন, নিজের দেশে অবস্থানরত ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে ভারতকে অনুরোধ করতে তিনি কোনো সময়ক্ষেপণ করবেন না। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। 

মোহামেদ মুইজু নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। তার আগে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নির্বাচনে বিজয় অর্জনের পর দু’চারদিন পরই তিনি ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাকে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় প্রতিজন সেনা সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত। 
   
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ভারতের প্রভাব বলয়ের অধীনে মালদ্বীপ। সেখানে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুইজু চীনপন্থি।

ফলে ভারতকে এমন নির্দেশ দেয়াতে মালের সঙ্গে দিল্লির কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হতে পারে। দেশটিতে বর্তমান ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ। তিনি ভারতপন্থি। ক্ষমতায় যান ২০১৮ সালে। তারপর থেকে মালদ্বীপকে তিনি দিল্লির খুব ঘনিষ্ঠ বানিয়ে ফেলেছেন। তার নীতিই ছিল ইন্ডিয়া-ফার্স্ট। 
কিন্তু চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মুইজু এবার নির্বাচিত হওয়াকে ভারতের জন্য পশ্চাৎপদতা হিসেবে দেখা হয়। 

অন্যদিকে মোহামেদ মুইজুকে সমর্থনকারী জোটের সঙ্গে ভারতের এমন সম্পর্ক মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলতে পারে।
 
মোহামেদ মুইজুর যে জোট তাদের সঙ্গে চীনের আছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। দেশটিতে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন। এই অর্থ দিয়েছে ঋণ আকারে, অবকাঠামো খাতে ঋণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে। কিন্তু এই দ্বীপরাষ্ট্রটি ভারত মহাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ভারত কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। তাই তারাও সেখানে শক্তভাবে পা রাখতে চায়। উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে মালদ্বীপকে ২০০ কোটি ডলার দিয়েছে ভারত। যদি তার সেনাদেরকে মালদ্বীপ ছাড়তে বাধ্য হতে হয়, তাহলে তা হবে নয়া দিল্লির জন্য একটি বড় আঘাত।

২০১০ ও ২০১৩ সালে মালদ্বীপকে উপহার হিসেবে দুটি হেলিকপ্টার দিয়েছে ভারত। ২০২০ সালে দিয়েছে একটি ছোট বিমান। এসব উপহারকে এবার ‘ভারত আউট’ প্রচারণায় গতি দেয়। দিল্লি বলেছে, হেলিকপ্টার ও বিমান সমুদ্রে অনুসন্ধান ও উদ্ধার মিশনে ব্যবহারের জন্য দিয়েছে তারা। কিন্তু মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা বাহিনী ২০২১ সালে বলেছে, এসব এয়ারক্রাফট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারতের প্রায় ৭৫ জন সেনা কর্মকর্তা অবস্থান নিয়েছেন সেখানে। এর ফলেই সন্দেহ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। অনেক মানুষ মনে করতে থাকেন যে মালদ্বীপে ভারতীয়দের পা রাখার একটি অজুহাত হিসেবে এসব উপহার দেয়া হয়েছে। 

মোহামেদ মুইজু বলেন, এসব সেনা সদস্যের উপস্থিতি মালদ্বীপকে ঝুঁকিতে ফেলবে। তিনি এ কথা বলেছেন এমন এক সময়ে যখন হিমালয় সীমান্তে চীনের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনা লেগেই আছে। মুইজু বলেন, বৈশ্বিক শক্তির লড়াইয়ের জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে মালদ্বীপ খুবই ছোট্ট একটি দেশ। আমরা এতে জড়াতে পারবো না। 

ওদিকে নির্বাচনের আগে বিবিসিকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সোলিহ বলেছিলেন, ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতি নিয়ে আতঙ্ককে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। মালদ্বীপে কোনো বিদেশি সামরিক বাহিনী সক্রিয় নেই। মালদ্বীপস ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের অপারেশনাল কমান্ডের অধীনে অবস্থান করছেন ভারতীয় সেনারা। 

তবে শুধু সেনা বা এয়ারক্রাফটই নয়, মুইজু বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তার দেশ, তার সবটাই তিনি রিভিউ করে দেখবেন। তিনি বলেন, এসব চুক্তিতে কী আছে আমরা জানি না। এমনকি পার্লামেন্টে এ নিয়ে বিতর্কের সময় কিছু এমপি বলেছেন, তারাও জানেন না চুক্তিতে কী আছে। তাই আমি নিশ্চিত এর আদ্যোপান্ত খুঁজে বের করবো। 

ওদিকে তার বিজয়ের পর পর্যবেক্ষকরা এটা আমলে নিয়েছেন যে, মালেতে অবস্থানরত চীনা রাষ্ট্রদূত দ্রুততার সঙ্গে মুইজুকে অভিনন্দিত করেছেন।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078