প্রবাসীদের বঞ্চনা

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:২৭ , অনলাইন ভার্সন
প্রবাসীদের জীবনে বঞ্চনার শেষ নেই। তারা দেশের মাটি ছাড়তে বাধ্য হয়ই বোধ হয় অভিশাপ নিয়ে। তারা ঘর-সংসার ত্যাগ করে অচেনা-অজানার উদ্দেশ্যে পা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের সঙ্গী হয় বিড়ম্বনা। প্রবাসজীবন মানেই প্রবঞ্চনা, দুঃখ, কষ্ট, স্বপ্ন ভঙ্গ। কোন প্রবাসীই শুধু দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের জন্য জন্মভূমি ছাড়ে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য কিছুটা অর্জিত হলেও নানাদিকে বিড়ম্বনা বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়। বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মেলে না। প্রবাসীদের অনেক স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। বাস্তবে রূপ নেয়ার সুযোগ পায় না। শুধু দুর্ভাগ্যই বয়ে বেড়াতে হয় না, জীবন দিয়ে পর্যন্ত ঘর ছাড়ার মাসুল গুণতে হয়।

প্রবাসীদের নিয়ে কেবল যে তাদের ভাগ্যই বিড়ম্বনা বা উপহাস করে তা নয়, বিপদে যারা প্রবাসীদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকে, সুযোগ পেলে তারাই প্রবাসীদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। চেনা মানুষ অচেনা হয়ে যায়। চোখের পাতা নামিয়ে নেয়। তাই তো বাংলা প্রবাদে বলে, ‘সুসময়ে বন্ধু বটে অনেকেই হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়’। স্বদেশ স্বজনদের সব সংকটে, সব সমস্যায় প্রবাসীরা সব সময় স্বদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায়, সেসময় কত নামে যে প্রবাসীদের সম্বোধন করা হয়, তা বলে শেষ করার নয়। দেশবন্ধব, অর্থনীতির ঢাকা সচল রাখার চালিকাশক্তি। সরকারও নিজেদের দাবি করে ‘প্রবাস-বান্ধব’ সরকার বলে। প্রয়োজনের সময়, যখন প্রমাণ দেয়ার সময় আসে, তখন দেখা যায়, প্রবাসীদের সম্পর্কে স্বদেশবাসীর, এমনকি সরকারের সুবচন সব অর্থহীন বলে প্রমাণিত হয়।
প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হয় দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে। প্রবাসীরা দেশের জন্য সবকিছু করতে পারবে, কিন্তু অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে তাদের কোন জায়গা নেই। বিশেষ করে জাতীয় সংসদের নির্বাচনে। যে দু’একটি ব্যত্যয় লক্ষ্য করা যায় কালেভদ্রে, তা মোটেও আলোচনার যোগ্য নয়। যেমন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে প্রবাসীরা শতভাগ উপেক্ষিত। বিভিন্ন দেশে বসবাস করেও তারা দেশের প্রতি সর্বক্ষেত্রে নিবেদিত। যেকোন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে উদগ্রীব। রাজনীতিতে সক্রিয়। 
দেশের উন্নয়নে, বিনিয়োগে সক্রিয়। রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলে সব সময় তাদের প্রশংসাও করা হয়। তাদের এসব অবদানের কথা উচ্চারিতও হয় বিভিন্ন সময়, সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে। কিন্তু নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগের নৌকার মাঝি হতে পারেননি একজনও। বিএনপিতো নির্বাচনে বাইরে। অন্য কোন দল থেকেও লক্ষ্যণীয় নয়।

ঠিকানা’র গত ২৯ নভেম্বর সংখ্যায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রবাসী প্রার্থীরা উপেক্ষিত’ শিরোনামে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ ‘প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধা। সরকার নিজেকে দাবি করেন প্রবাসী বান্ধব। প্রবাসী অনেেকই রয়েছেন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার মত। বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদান কারো চেয়ে কম নয়। কিন্তু একজনও নৌকার মাঝি হতে পারেন না। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাÑ কোন দেশ থেকেই কেউ যোগ্য বিবেচিত হননি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ভাইস প্রেসিডেন্ট, উপদেষ্টা মনোনয়ন চেয়েছিলেন দলের। তারা নমিনেশন না পেয়ে বিদ্রোহ করেননি। এতটাই তাদের আস্থা দলের নেত্রী, নৌকার কান্ডারী শেখ হাসিনার উপর। দলের নেতা-কর্মীরা অখুশি না হতে পারেন। কিন্তু সাধারণ প্রবাসীদের তো একটা প্রত্যাশা থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবাসী রাজনীতিকের মন্তব্য, প্রায় দুই কোটি প্রবাসী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছেন। দেশের মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে হলে জাতীয় সংসদে অন্তত ৩৫ টি আসন প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষণ করা উচিৎ। অথচ রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে একেবারেই নিশ্চুপ।

প্রবাসীদের আন্তরিক প্রত্যাশা, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিকভাবে মনোযোগ দেবেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078