গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সোলার পাম্প

প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৯ , অনলাইন ভার্সন
জেলার মাঠে মাঠে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেল ডিজেল ছাড়াই ভূগর্ভস্থ পানি চলে যাচ্ছে কৃষকের আবাদি জমিতে। কেবল ধান নয়, কৃষক সেচের পানি ব্যবহার করছেন কলার বাগানে, সবজির জমিতে। পুরো জেলার আবাদি জমি সোলার পাম্পের আওতায় আনলে কৃষি নির্ভর মেহেরপুর জেলায় বিপ্লব ঘটে যাবে সেচ সুবিধার কারণে। সোলার পাম্পে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড লাইনে সংযুক্ত করলে দেশে বিদ্যুৎ সংকট দূর হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় ২০ হর্স পাওয়ারের ২৪টি ও সাড়ে সাত হর্স পাওয়ারের ১১টি সোলার সেচ পাম্প চালু রয়েছে। এ ছাড়া নদ নদী কেন্দ্রিক সেচ পাম্প রয়েছে ৩০টি, ভূগর্ভস্থ সোলার সেচ পাম্প রয়েছে ৩৩টি। নদ নদী কেন্দ্রিক সেচ পাম্প থেকে প্রতিদিন ৩০ বিঘা জমি এবং ভূগর্ভস্থ মিনি সেচ পাম্প থেকে প্রতিদিন ৩০ বিঘা জমি সেচ সুবিধা পাচ্ছে। ২০ হর্স পাওয়ার সোলার সেচ পাম্প নির্মাণে ৫৬ লাখ টাকা ও সাড়ে সাত হর্স পাওয়ারে খরচ হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের অনুকূলে তিন হাজার একর জমি সেচের আওতায় নেওয়া আছে।

মেহেরপুর জেলায় প্রায় তিন হাজার বিঘা জমিতে সোলার সেচ পাম্পের কারণে জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে সোলার পাম্প গ্রামীণ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্বল্প খরচে কৃষকরা তাদের কৃষি জমিতে সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্পের সেচ সুবিধা ভোগ করায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ প্রযুক্তির চাহিদা। মাঠে মাঠে এখন নতুন করে সম্প্রসারিত হচ্ছে ব্যাটারিবিহীন সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প। ফলে এ জেলায় এখন দেখা দিয়েছে সবুজ কৃষি বিপ্লবের অপার সম্ভাবনা। মুজিবনগর সেচ প্রকল্পের আওতায় এসব পাম্প স্থাপন হয়েছে। যার আর্থিক সহায়তা করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নযন কর্পোরেশন (বিএডিসি) প্রতিষ্ঠান।
এখন চাষিদের বিদ্যুতের অপেক্ষায় থাকতে হয় না। কিংবা ছুটতে হয়না ডিজেল চালিত পাম্প মালিকদের কাছে। স্বল্প খরচে সব ধরণের ফসলে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন চাষিরা।

প্রতিটি সোলার সিস্টেমে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত মাঠে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পাম্পগুলোতে প্রতিদিন প্রায় সাত কোটি ২০ লাখ লিটার পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার ইউনিট বিদ্যুতের সাশ্রয় হচ্ছে। এগুলো ঝামেলা ছাড়াই টানা ২০ বছর সার্ভিস দেবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সুবিধাভোগিরা জানান, প্রতিবার সেচ দিতে বিঘা প্রতি ৪ থেকে ৫ লিটার ডিজেল কিনতে হতো। পাঁচ লিটার ডিজেলের বাজার মূল্য সাড়ে ৪‘শ টাকা। কিন্তু এখন সোলার   পাম্পের কারণে মাত্র ৩‘শ টাকায় এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে পারছেন। এরফলে গ্রামঞ্চলে জ্বালানি হিসেবে খুচরা ডিজেল বিক্রেতাদের ডিজেল বিক্রি এখন প্রায় শূণ্যের কোঠায়। কারণ, আগের মতো কৃষি কাজের জন্য ডিজেল বিক্রি হয় না।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের কৃষক জাহিদুল হাসান বলেন, আগে ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিনের চালককে তেল কিনে বাড়িতে দিয়ে আসলে জমিতে পানি দিয়ে দিত। তেল দিতে দেরি হলে সেদিন আর পানি দেয়া হতো না। এতে সময়মত পানি না দেয়ার কারণে ফসলের ক্ষতি হত। বর্তমানে সোলার সেচপাম্প হওয়ায় ফোন দিলেই পানি দিয়ে দেয়। সময়মত পানি দেয়ায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

মেহেরপুর বিএডিসির প্রকৌশলী প্রকৌশলী মো. শাহরিয়ার আহমেদ জানান, কৃষি উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন তথ্য প্রযুক্তির সমন্বিত ব্যবহার করে কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে হবে। সেকেলে আর মান্ধাতার আমলের কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির বদলে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। সৌরবিদ্যুৎ চালিত সোলার সেচ পাম্প আমাদের কৃষি ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে। মুজিবনগর সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন মাঠে ভূগর্ভস্থ ও ছাড়াও নদী কেন্দ্রিক সোলার সেচ পাম্প আশির্বাদ হিসেবে কাজ করছে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078