উবার ও লিফটের কাছে যেসব ড্রাইভারের বকেয়া পাওনা রয়েছে, তা আদায়ের জন্য আবেদন শুরু হচ্ছে ৭ মার্চ থেকে। রাস্ট কনসাল্টিংয়ের সাইটে গিয়ে ড্রাইভাররা আবেদন করতে পারবেন। রাস্ট কনসাল্টিং ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যদি কেউ আবেদন করেন কিংবা কোনো লিঙ্ক পেয়ে থাকেন, তাহলে সেসব লিঙ্কে কোনো পাওনাদার ড্রাইভারকে ক্লিক না করার এবং আবেদন না করার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ধরনের হলে সেটি স্ক্যাম মনে করতে হবে। অর্থ পাওয়ার জন্য কেবল রাস্ট কনসাল্টিংয়ের মাধ্যমেই পাওনাদার ড্রাইভাররা আবেদন করতে পারবেন।
নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্সের সূত্র জানায়, আবেদন করার পর গাড়িচালকের আবেদনের বিষয়ে রাস্ট কনসাল্টিং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তবে মনে রাখতে হবে, কেবল যোগ্য ড্রাইভাররাই এই অর্থ পাবেন। কোন সময়ের জন্য অর্থ পাবেন, সেটাও বলা হয়েছে। শুধু নিউইয়র্কের লিফট ও উবার চালকরা অর্থ ফেরত পাবেন, অন্য কোনো স্টেটের উবার-লিফট চালকরা এই আবেদন করতে পারবেন না। তবে ওই সময়ে কেউ যদি নিউইয়র্কে থেকে থাকেন এবং তাদের কাছ থেকে উবার ও লিফট বাড়তি অর্থ নিয়ে থাকে, তাহলে তারাও আবেদন করতে পারবেন। মূলত ২০১৫-২০১৭ সাল পর্যন্ত লিফটের যেসব চালকের কাছ থেকে বেশি অর্থ নেওয়া হয়েছে, তারাই অর্থ ফেরত পাবেন। লিফটের ড্রাইভার্স অ্যাপের মাধ্যমে নিউইয়র্ক স্টেটে রাইড দিয়েছেন ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়ের জন্য ব্যাক পেমেন্ট পেতে পারেন। যেসব ড্রাইভারের কাছ থেকে নিউইয়র্ক সেলস ট্যাক্স ও ব্ল্যাক কার ফান্ডস ফি নেওয়া হয়ে থাকে, সেসব ড্রাইভারের কাছে লিফট ড্রাইভারদের অর্থ বকেয়া হয়েছে। উবার ড্রাইভারদের জন্য বলা হয়েছে, ২০১৪-২০১৭ সালের বকেয়া পাওনা পাবেন। এর মধ্যে উবারস ড্রাইভার অ্যাপ ব্যবহার করে রাইড প্রেপাইড করেছে নিউইয়র্ক স্টেটে ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ২০১৭ সালের মে ২২ পর্যন্ত, সেসব ড্রাইভারের কাছ থেকে নিউইয়র্ক সেলস ট্যাক্স ও ব্ল্যাক কার ফান্ড ফি নিয়েছে, তারের কাছে উবার মানি বকেয়া হয়েছে। এসব বকেয়ার অর্থ উবার ড্রাইভাররা ফেরত পেতে পারেন। এ জন্য যোগ্য ড্রাইভারদের দ্য রাস্ট কনসাল্টিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্সের লেবার অর্গানাইজার মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল সংবাদ সম্মেলন করার পর এখতিয়ার না থাকার পরও ড্রাইভারদের ফেরত অর্থ পাওয়ার বিষয়ে আবেদন করার জন্য লিঙ্ক চালু করে। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে ড্রাইভারদের সতর্ক করা হয়, যাতে তারা কেউ স্ক্যামের শিকার না হন। তাদেরকে কেবল রাস্ট কনসাল্টিংয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করার জন্য বলা হয়। কিন্তু এর মধ্যে একটি ফার্ম থেকে ড্রাইভারদের পাওনা অর্থ আদায়ের জন্য একটি লিঙ্ক পাঠিয়ে আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেক ড্রাইভার না বুঝে ওই লিঙ্কে ক্লিক করেন এবং অন্যদেরও শেয়ার করতে শুরু করেন। এটি নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্সের নজরে আসে। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসেরও নজরে আসে। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে ওই ফার্মকে সমনও পাঠানো হয়েছে।
টিপু সুলতান আরও বলেন, ওই ফার্মের লিঙ্কে যেসব ড্রাইভার আবেদন করেছেন, তাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাদেরকে রাস্ট কনসাল্টিংয়ের মাধ্যমে তাদের সাইটে গিয়ে আবারও আবেদন করতে হবে। তারা ড্রাইভারদের আবেদনের পর আপডেটও জানাবে। এই আবেদন ১ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন ৭ মার্চ থেকে শুরু হবে।
উল্লেখ্য, লিফট ও উবার ড্রাইভারদের বকেয়া পাওনার বিষয়ে একটি স্যাটেলমেন্ট হয়। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে নিউইয়র্ক স্টেটের উবার ও লিফটের ড্রাইভারদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হয়। এর মধ্যে ব্যাক পেমেন্টের বিষয়টিও রয়েছে। যেসব ড্রাইভার উবার ও লিফটের কাছে বকেয়া পাওনার যোগ্য হবেন, তারা দ্য রাস্ট কলসাল্টিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফাইল ক্লেম করতে পারবেন। যেসব ড্রাইভারের কাছ থেকে নিউইয়র্ক সেলস ট্যাক্স ও ব্ল্যাক কার ফান্ড ফি নিয়েছে, সেসব ড্রাইভারের কাছে লিফট ও উবার মানি বকেয়া হয়েছে। বকেয়া পাওনার পাশাপাশি লিফট ও উবার চালকদের জন্য কিছু বেনিফিট নিশ্চিত করার বিষয়েও অ্যাটর্নি জেনারেল লেটেশিয়া জেমস উবার ও লিফট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করতে সক্ষম হয়েছেন। নতুন বেনিফিটের মধ্যে রয়েছে সিক লিভ, পেমেন্ট, ট্রেনিং, চাট সাপোর্ট। উবার ও লিফটের সাইটে ভিজিট করে কারেন্ট বেনিফিটগুলো ম্যানেজ করা যাবে।
নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেলের এই উদ্যোগে উবার ও লিফট চালকেরা খুবই খুশি। এত দিন পর হলেও তারা বিভিন্ন সুবিধা পেতে যাচ্ছেন। উবার ও লিফটের চালকেরা আবেদন করতে গিয়ে যাতে কোনো ধরনের স্ক্যামের শিকার না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে বলা হয়েছে। ড্রাইভারদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, কেউ আপনাকে অফার করতে পারে যে লিফট কিংবা উবারের এই সেটেলমেন্টের অর্থ পাওয়ার জন্য ফাইল ক্লেম করতে সহায়তা করবে। ফোন নম্বর, কলার আইডি, ইমেইল অ্যাড্রেস ফেকড হতে পারে। তাই আপনার পার্সোনাল, ফাইন্যান্সিয়াল কোনো ইনফরমেশন কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। কারণ, আপনি নিজেই সরাসরি রাস্ট কনসাল্টিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারবেন। সেখানে ফোন কিংবা ইমেইল করেও কথা বলা যাবে।