Thikana News
২৬ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

ডলার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের  খবরদারি, ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা

ডলার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের  খবরদারি, ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা
বাংলাদেশে রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং টাকার মান বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। আর এর অংশ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক শুরু করেছে হুন্ডিবিরোধী অভিযান। এই অভিযানে দুই শতাধিক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে যে কোনো সময়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই খবরদারির সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্সে। হঠাৎ ডলার প্রতি ৫-৮ টাকা কমে যাওয়ায় লাখো প্রবাসী জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন না। অন্যদিকে মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলো ডলারের দাম কমিয়ে দেওয়ায় ব্যবসা করতে পারছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা সরকারের হঠাৎ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা বলছেন, জোর করে সরকার টাকার মান বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আর সাধারণ মানুষ ও প্রবাসীরা এর মাশুল দিচ্ছেন। তাদের মতে, টাকার মান বাড়লে বাজার দ্রব্যমূল্য কমবে। কিন্তু  হয়েছে ঠিক উল্টো। রোজায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। অথচ ডলারের দাম কমে গেছে প্রতি ডলারে ৫ থেকে ৮ টাকা। আগে ১ ডলারে যেখানে ১২৩ থেকে ১২৪ টাকা পাওয়া যেত, এখন পাওয়া যাচ্ছে ১০৯ টাকা থেকে ১১৭ টাকা। এটা প্রবাসীদের জন্য দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়। 
নিউইয়র্কের একাধিক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তা ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে বলেন, টাকার মান প্রকৃতভাবে বাড়লে ভালো। কিন্তু জোর করে বাড়িয়ে দেখানো হলে তা তবে অর্থনীতির জন্য বিপদ সংকেত। তিনি বলেন, বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সরকার ভুল পথে হাটছে। কিন্তু এই ভুলে রিজার্ভ এক মাসের মাথায় আরো কমবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিকে ডলার ও টাকাকে আপন গতিতে চলতে দেওয়া হোক। প্রয়োজনে সরকার হুন্ডি বন্ধে অভিযান জোরদার করুক। 
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, হুন্ডি সংযোগের কারণে প্রতিদিন প্রায় ২০০ মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) হিসাব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।তিনি বলেন, যেকোনো উপায়ে মানিলন্ডারিং কার্যক্রম রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে বাণিজ্য লেনদেন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। গত ১১ মার্চ সোমবার রাজধানীতে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত (সিআইডি) বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর এসব কথা বলেন।
হুন্ডি নিষিদ্ধের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দৃঢ় অবস্থানের কথা তুলে ধরে গভর্নর বলেন, প্রবাসীরা দেশে তাদের পরিবারকে হয়তো ৫০০ টাকা পাঠাবেন। সেক্ষেত্রে তিনি বিদেশে পরিচিত কাউকে সেই টাকা দেন এবং দেশে থাকা তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে সেই টাকা স্বজনদের দিচ্ছেন সেই টাকা বিদেশে পড়ে থাকে। এর বিপরীতে বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি এই অর্থ পরিশোধ করেছেন। আগে যেহেতু হোম ডেলিভারির মাধ্যমে পেমেন্ট করা হতো, এখন তা এমএফএসের মাধ্যমে করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ২০০টি এ ধরনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হচ্ছে। পরে আবার গ্যারান্টি দিয়ে কিছু অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, কয়েকজনের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মানি চেঞ্জারদের বিরুদ্ধে প্রচারণার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে গভর্নর বলেন, দেশে প্রতি বছর মানি চেঞ্জারদের মাধ্যমে ৪৫ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলারের লেনদেন হয়। ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ২৭০ বিলিয়ন ডলারের ট্রানজিশন হয়। কিন্তু লেনদেনের সামান্য অংশ সত্ত্বেও মানি চেঞ্জাররা ডলারের দর বাড়িয়ে দিলে অনেক প্রবাসী রেমিট্যান্স আটকে রাখার চেষ্টা করেন। এভাবেই ডলার সংকট তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রউফ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘এজন্য মানি চেঞ্জারদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এটা আমাদের দেশে সম্পূর্ণ বেআইনি।’

কমেন্ট বক্স