মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব বিএনপিকে হতাশ করেছে। বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল, নীতি, নেতৃত্বহীন, অদূরদর্শী কার্যকলাপ বিদেশিদেরও দারুণভাবে আশাহত করেছে। ফলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার আঁধারেই ঢাকা পড়ল।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরোধী দলের যথেষ্ট অনুকূলে থাকলেও বিএনপির নেতৃত্ব তার কোনো সুফল নিতে পারেনি। এমন কোনো পরিস্থিতিই সৃষ্টি করতে পারেনি, যা থেকে তারা রাজনৈতিক ফায়দা নিতে পারে। কয়েকজন পশ্চিমা কূটনীতিক অনানুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিককে জানান, অগণতান্ত্রিক, উচ্ছৃঙ্খল পথে অরাজকতা, নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা কখনোই তাদের প্রত্যাশিত নয়। কোনো রাজনৈতিক দল বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা সৃষ্টির পথ নিলে তার দায়দায়িত্ব সেই দলের।
বিদেশি কূটনীতিকেরা বলতে চাননি যে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি তার ভুলেরই মাশুল দিচ্ছে কি না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, দেশি-বিদেশি কারও ওপর দায় চাপিয়ে ব্যর্থতার গ্লানি থেকে তারা রেহাই পাবেন না। জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে বিএনপির নেতারাই বেহদিস হয়ে যান। নির্বাচনের পর দিবালোকে এসেও তারা সরকার পতনের আন্দোলনের কথা আগের মতো জোরালোভাবে না বললেও সরকারবিরোধী আন্দোলন নতুন করে শুরু করার কথা বলছেন। অথচ জাতীয় নির্বাচনের পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়ে গেল। দলগতভাবে বর্জন করলেও বিএনপির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতার স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ঠেকিয়ে রাখতে পারেননি দলটির নেতারা। নির্বাচন-পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অবাধ, নিরপেক্ষ, প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাদের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা নির্বাচনে এমপি, মন্ত্রীদের অবৈধ প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। বিদেশিরা নির্বাচন নিয়ে কোনো রকম অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগও করেননি।
বিএনপি ও তার সহযোগী দল, জোট- বারো দলীয় জোট, এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদ, জাসদ (রব)সহ ৩৭টি ছোট ছোট দল ও জোট বিদেশিদের এই ভূমিকায় দারুণভাবে আশাহত হয়। সরকারবিরোধী আন্দোলনের ফলে অরাজকতা, নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হলে এবং সরকার তাদের মোকাবিলায় কঠোর কর্মপন্থা নিলে কোনো সহানুভূতি জানানোও সম্ভব হবে না মর্মে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। বিদেশিদের, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই মনোভাব জামায়াত ও তার সহযোগী আরও কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠনের মধ্যে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন প্রশ্নে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করেছে। নেতৃত্ব ও দিশাহীন কোনো দলের পক্ষে সরকারবিরোধী কার্যকর আন্দোলনে নিজ দল ও জোটের নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব নয় বলে ইসলামি কোনো কোনো দল থেক বিএনপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের এই বৈরী মানসিকতার মধ্যেও বিএনপির নেতারা জামায়াত ও তার সঙ্গী ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। নানাভাবে তাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। লন্ডন থেকে তারেক রহমান ইসলামি দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। সরকারি সংশ্লিষ্ট মহল সার্বিক বিষয়ে অবহিত থেকে যথাযথ কর্মপন্থা নিচ্ছে, নেওয়ার প্রক্রিয়া করছে। এ-সংক্রান্ত খবর জামায়াতসহ অন্য ইসলামি দলগুলোর নেতাদের অবগতিতে থাকায় তারা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তৎপরতা চালাচ্ছেন। বিএনপির চেয়ে সরকারি দলের নেতা ও সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে এদের যোগাযোগ অনেক বেশি বলেই জানা যায়।
                           
                           
                            
                       
    
 
 


 ঠিকানা অনলাইন 
                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
