ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি লেউতোবি লাকি-লাকিতে শক্তিশালী অগ্নুৎপাত হয়েছে। এর ফলে আকাশের ১১ কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতায় ছড়িয়ে পড়ে বিশাল ছাইয়ের মেঘ। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে এ অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ ফ্লোরেস-এর কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। দেশটির ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে, অগ্নুৎপাতের পরপরই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এক হাজার ৫৮৪ মিটার উঁচু এই যমজ চূড়াবিশিষ্ট আগ্নেয়গিরির চারপাশে ৭ কিলোমিটার ব্যাসের নিষিদ্ধ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত নভেম্বরে একাধিকবার অগ্নুৎপাত ঘটিয়েছিল লেউতোবি, যেখানে ৯ জনের মৃত্যু হয় এবং হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ছাইয়ের কারণে বিমান চলাচলও ব্যাহত হয়।
ভূতাত্ত্বিক সংস্থার প্রধান মুহাম্মদ ওয়াফিদ সতর্ক করে বলেন, কেউ যেন এই ৭ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের কার্যক্রম না চালান। তিনি বলেন, “তীব্র বৃষ্টিপাতে ছাই, কাদামাটি ও আগ্নেয়গিরির উপাদান মিশে ‘লাহার’ প্রবাহ তৈরি হতে পারে”, যা মারাত্মক বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, কমপক্ষে একটি গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বহু গ্রামে ছাইয়ের বৃষ্টি হয়েছে। আশপাশের গ্রামগুলোতে ছাই থেকে বাঁচতে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, “আগ্নেয়গিরির আশেপাশের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে”, কারণ এখনো মাটির নিচে কম্পন অনুভূত হচ্ছে, যা আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তার ইঙ্গিত দেয়।
লেউতোবি লাকি-লাকি নামটি ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় “পুরুষ” বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি যমজ চূড়ার একটি অংশ, অন্য চূড়াটি লেউতোবি পেরেম্পুয়ান, যার অর্থ “নারী”। তবে নারীচূড়াটি তুলনামূলকভাবে শান্ত হলেও এটি আরও উঁচু—(এক হাজার ৭০৩ মিটার)।
সর্বশেষ মে মাসে এই আগ্নেয়গিরিতে অগ্নুৎপাত হয়েছিল, তখনও কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছিল।
ইন্দোনেশিয়া ‘রিং অফ ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ঘটে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে আরও এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ঠিকানা/এসআর