অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে দর্শকের উদ্দেশ্যে ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন ও ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি কমিউনিটি বিনির্মাণে কাজ করছে ঠিকানা। একইসঙ্গে বাংলা সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ঠিকানার সঙ্গে থাকার আহ্বান জানান তারা।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল নোভার অনবদ্য উপস্থাপনায় মঞ্চে আসেন প্রতীক হাসান। তার গানে উপস্থিত দর্শকদের মাঝে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। তিনি তার প্রয়াত বাবা খালিদ হাসান মিলুর জনপ্রিয় কিছু গান গেয়ে শোনান। দিনটি ছিল বাবা দিবস। এ কারণে নিজের একক গান শেষে একমাত্র কন্যাকে মঞ্চে আনেন প্রতীক। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী। পরে কন্যাকে কোলে নিয়ে মঞ্চে ছাড়েন তিনি।
বড় ভাইয়ের পর মঞ্চে আসেন ছোট ভাই প্রীতম হাসান। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের ক্রেজ প্রীতম হাসান মঞ্চে আসার সঙ্গে সঙ্গে দর্শকেরা ব্যাপক করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। দর্শকদের বাঁধভাঙা জোয়ারে নিজেকে বিলিয়ে দেন তিনি। দর্শকরা নেচে গেয়ে প্রীতম হাসানকে বরণ করে নিতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণ ছিলো জনপ্রিয় ব্যান্ড ব্ল্যাক-এর মুল ভোকাল জন কবির। তিনি একটিমাত্র গান পরিবেশন করেন। দর্শকদের ব্যাপক অনুরোধ থাকলেও তিনি তা রাখতে পারেনি।
প্রীতম ও প্রতীকের কনসার্টের ডায়মন্ড স্পন্সর ছিল রুহিন হোসেনের প্রতিষ্ঠান ‘রিভার’। অনুষ্ঠানে তার প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। রিভার-এর আরেক কো-ফাউন্ডার ইয়াসিন আরাফাতকে সঙ্গে নিয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন তিনি। তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রীতম হাসান। একই অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সর ছিল বর্হির্বিশ্বে সর্বাধিক জনপ্রিয় পত্রিকা ‘ঠিকানা’। অনুষ্ঠানে ঠিকানাকেও সম্মাননা প্রদান করা হয়। ঠিকানা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিওও মুশরাত শাহীন অনুভার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রীতম হাসান।
এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশি মিউজিক এন্টারটেইনমেন্টের কর্ণধার জামান মনির, ঠিকানা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিওও মুশরাত শাহীন অনুভা এবং রিভার-এর কো-ফাউন্ডার ও সিইও রুহিন হোসেন।
এদিকে কনসার্টে বিশেষ পর্বে প্রীতম ও প্রতীকের সঙ্গে মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দেন রিভার-এর সিইও রুহিন হোসেন। জমকালো আয়োজনে বড় একটি কনসার্টে গান পরিবেশন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত রুহিন হোসেন বলেন, হঠাৎ এভাবে মঞ্চে প্রীতম হাসান তাকে গান গাইতে ডাকবেন, ভাবিনি। বেশ ভালোই লেগেছে। আমি নিজেই সারপ্রাইজ হয়েছি। আরো ভালো লেগেছে দুজন জনপ্রিয় শিল্পীর সঙ্গে গাইতে পেরে। প্রীতম-প্রতীকের কনসার্টের স্পন্সর হিসাবে থাকতে পেরে ‘রিভার’ গর্বিত, বলেন রুহিন।
প্রীতম ও প্রতীকের কনসার্টের টিকেট অনেক আগেই শেষ হয়ে যায়। এ কারণে এলপিএসি মিলনায়তন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। অনুষ্ঠান শুরু হয় রাত সাড়ে ৮টায়। তার য়েক ঘণ্টা আগেই দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় মিলনায়তনের সামনে। ভিড় সামলাতে পুলিশসহ নিরাপত্তা কর্মী আগেই প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তার প্রয়োজন হয়নি। দর্শকেরা সুশৃঙ্খলভাবে মিলনায়তনে প্রবেশ করেছেন। অনুষ্ঠান শেষে সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন, নিউইয়র্কে এত গোছালো কনসার্ট অতীতে কখনো হয়নি। এজন্য তারা আয়োজক প্রতিষ্ঠান দেশি মিউজিক এন্টারটেইনমেন্টকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
দর্শকদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে দেশি মিউজিক এন্টারটেইনমেন্ট-এর কর্ণধার জামান মনির বলেন, আমি অভিভুত। প্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছি প্রবাসীদের কাছ থেকে। এটি আমাকে আগামীর অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আগামী আরো ভালো কনসার্ট উপহার দিতে পারবো। তিনি জানান, আগামী আগস্ট মাসের শেষে অথবা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবারও নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের জন্য প্রীতম হাসানের একক কনসার্টের আয়োজন করা হবে। এজন্য ভালো একটি ভেন্যু খুজছি, জানান জামান মনির।