Thikana News
২৮ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

কলকাতার আইন কলেজে ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩

কলকাতার আইন কলেজে ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩ ছবি সংগৃহীত



 
ভারতের দক্ষিণ কলকাতার সরকারি আইন কলেজ ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে (২৪) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে শহরজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার (২৫ জুন) বিকেল ৪টার দিকে ওই ছাত্রী কলেজে ফরম ফিলআপের কাজে গেলে অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র (৩১) নামের এক প্রাক্তন ছাত্র ও কলেজ কর্মচারী তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। সন্ধ্যা নামার পর ছাত্রীটি যখন বের হওয়ার চেষ্টা করেন, তখন তাকে ইউনিয়ন রুমসংলগ্ন একটি ঘরে ডেকে নিয়ে কুপ্রস্তাব ও বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় তাকে জোরপূর্বক বাথরুমের পাশে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে আগে থেকে ছিল অভিযুক্ত অপর দুই ছাত্র জইব আহমেদ (১৯) ও প্রমিত মুখার্জি (২০)। বাইরে থেকে দরজা আটকে তারা ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। অভিযোগ অনুযায়ী, এ ঘটনা চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত।

নির্যাতনের সময় ছাত্রীটির ভিডিও ধারণ করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তারা হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর কোনো রকমে বাড়ি ফিরে ছাত্রীটি পরদিন বৃহস্পতিবার কসব থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

পরে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে মনোজিৎ ও জইবকে তালবাগান এলাকা থেকে এবং প্রমিতকে রাত ১২টার দিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়।

এদিকে মনোজিৎ মিশ্রের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে লেখা আছে, তিনি একই কলেজের তৃণমূল কংগ্রেসের যুব শাখার (ছাত্রসংগঠনের) সাবেক সভাপতি। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিযুক্ত মনোজিৎ আগে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে তার কোনো পদ নেই। দল তার বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ত্রিনঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তি চাই। অভিযুক্তের সংগঠনের সঙ্গে অতীতে সম্পৃক্ততা থাকলেও বর্তমানে সে কোনো পদে নেই।’

এদিকে বিরোধী দল বিজেপি কড়া সমালোচনা করে বলে, ‘গত বছর আর জি কর মেডিকেল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছিল। এই রাজ্যে নারীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। মুখ্যমন্ত্রী এটিকে ছোট ঘটনা বলে উড়িয়ে দেবেন এবং কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ দেবেন।’

এ ঘটনার দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত—এমন মন্তব্য করেন বিরোধীদলীয় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

এদিকে ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন (এনসিডব্লিউ) কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার কাছে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে। অপরদিকে মনোজিৎ মিশ্রের আইনজীবী আজম খান জানান, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক শত্রুতার কারণেই তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

এ ঘটনায় আবারও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখনো আর জি কর মেডিকেল কলেজের সেই মর্মান্তিক ঘটনার ক্ষত শুকায়নি, এর মধ্যেই আবার দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে উত্তপ্ত শহর।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স