Thikana News
০৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
সারারাতের অধিবেশন শেষে হাউসে পাস

ট্রাম্পের সইয়ের অপেক্ষায় ‘বিগ বিউটিফুল বিল’

ট্রাম্পের সইয়ের অপেক্ষায় ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন কংগ্রেসে আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের অপেক্ষায়। বিলটি মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে (নিম্নকক্ষে) দীর্ঘ রাতভর বিতর্ক ও ভোটাভুটির পর পাস হয়। এর আগে এটি সিনেটেও পাস হয় ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের টাই-ব্রেকিং ভোটে।
বিলটিকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা কর কাঠামো সংস্কার, ব্যয় পরিকল্পনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
ডেমোক্র্যাটদের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউসে বিলটি একক ভোটের ব্যবধানে পাস হয়। এই বিলের মাধ্যমে ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নীতি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিলটি আইনে পরিণত করতে হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাতে স্বাক্ষর করতে হবে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সম্পন্ন হতে পারে বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিলটির পাস হওয়া ট্রাম্পপন্থী রিপাবলিকানদের জন্য বড় জয় এবং নভেম্বর নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।

এদিকে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস করানোর ব্যাপারে সিনেটরদের ওপর চাপ দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। ৪ জুলাই দেশটির স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিলটি পাস করাতে চাইছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। কিন্তু নতুন এই বিতর্কিত বিল নিয়ে তার নিজের দলের মধ্যেই প্রশ্ন আছে।  
 
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিটার লোগ ডিডাব্লিউকে বলেছেন, একটি বড় অংশের মানুষ এই বিলের বিরোধিতা করছেন কারণ, নতুন আইনে অ্যামেরিকানদের চিকিৎসা এবং সামাজিক নিরাপত্তার ওপর সরকারের যে ব্যয় ছিল তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

কী আছে নতুন বিলে? 
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে নেমে নির্বাচনি প্রচারে বারবার এই বিলের কথা বলেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলেই তিনি এই বিল বাস্তবায়িত করবেন। অবশেষে তা সম্ভব হলো। স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা খাতে ব্যয় সংকোচ করার পাশাপাশি এই বিলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং অভিবাবসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপারেও এই বিলে বিপুল অর্থ ধার্ষ করা হয়েছে। পাশাপাশি সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে এই বিলে। 

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই বিলে সেই সিদ্ধান্তগুলিকে রদ করে দিচ্ছে।  

অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধের যে প্রকল্প ট্রাম্প গ্রহণ করেছেন, তাতে ব্যয় করা হবে ১৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মেক্সিকোয় সীমান্ত পাঁচিল তৈরিতেও এই অর্থ খরচ হবে বলে জানানো হয়েছে। সীমান্তে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। সামরিক খাতে ব্যয় করা হবে ১৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে মিসাইল এবং যুদ্ধ জাহাজ তৈরিতে। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও বেশ কিছু অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে। 

তবে পরিবেশবিদেরা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে। প্রচারে ট্রাম্প একটি কথা বারবার বলেছেন, 'ড্রিল বেবি ড্রিল'। অর্থাৎ, নতুন করে খনিজ তেল উত্তোলন শুরু করতে হবে। এই বিলে সেই খাতে ব্যয় ধার্য করা হয়েছে। তোলা হবে প্রাকৃতিক গ্যাসও। এর আগে বিকল্প শক্তির জন্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করেছিল, তা বদলে দেওয়ার নীতি নিয়েছেন ট্রাম্প। ইলেকট্রিক গাড়িতে ছাড় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। 

বিলের বিরোধিতা
ট্রাম্পের একসময়ের বন্ধু ইলন মাস্ক থেকে রিপাবলিকান দলের একাধিক সদস্য এই বিলের বিরোধিতা করছেন। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প মার্কিন অর্থনীতিকে খাদের ধারে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাচ্ছেন। এর ফলে যে কোনো সময় বিপর্যয় ঘটতে পারে। পাশাপাশি যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলিকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও বহু বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশের ভিতর।  

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স