Thikana News
০৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ভিটামিন বি৬-এর ঘাটতি কী করে বুঝবেন এবং মেটাবেন যেভাবে

ভিটামিন বি৬-এর ঘাটতি কী করে বুঝবেন এবং মেটাবেন যেভাবে ছবি : সংগৃহীত
ভিটামিন বি৬ হচ্ছে পানিতে দ্রবণীয় এক ধরনের ভিটামিন। যেটি মানবদেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের বিপাকক্রিয়া, স্নায়ুর কাজ, হরমোনের তারতম্য ঠিক রাখা এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে প্রয়োজন হয় এই ভিটামিন। এই ভিটামিন অনেক কম পাওয়া যায় বলে এটাকে দুর্লভ বলা হয়। তবে এর পরিমাণ সামান্য কমলেই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।

শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভিটামিনের বিভিন্ন দিক নিয়ে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের ইন্টার্নাল মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আফলাতুন আকতার জাহান। তাহলে ভিটামিন বি৬ এর বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

কমে যাওয়ার কারণ: গুরুত্বপূর্ণ এই ভিটামিন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে কিছু ওষুধ। যেমন- আসসোনিয়াজাইড, যা যক্ষ্মারোগের চিকিৎসায় দেয়া হয়, পেনিসিলামিন, হাইড্রালাজিন, লেভোডোপা-কারবিডোপা জাতীয় ওষুধ। আবার কিছু অসুখের কারণে বি৬ এর সিনথেসিস হ্রাস পায়। যেমন- অ্যাজমা, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, অন্তঃসত্ত্বা, ব্রেস্ট ও রক্তের ক্যানসার, শিকল সেল ডিজিজ সময় ও গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানেও ভিটামিন বি৬-এর পরিমাণ কমে যায়।

উপসর্গ: ভিটামিন বি৬ অল্প পরিমাণ হ্রাস পেলেই শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। নিচে সেসব নিয়ে আলোচনা করা হলো-

ত্বকে র‌্যাশ বা ফুসকুড়ি: নাক-মুখের চারদিকে ত্বক ফেটে যায় বা ফুসকুড়ি উঠে, বেশ চুলকানি হয়। অনেক বেশি হলে সেবোরোইক ডার্মাটাইটিস বলা হয় এই সমস্যাকে।

ক্র্যাক লিপ: ঠোঁটের চারপাশে ফেটে যায় ও জিভ লাল হয়ে ফুলে যায়। বি৬ এর সঙ্গে বি১২ ও ফলেটও যদি কমে যায়, তাহলে মারাত্মক রূপ নেয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মুড চেঞ্জ: বি৬ সেরোটোনিন ও ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এ জন্য বি৬ হ্রাস পেলে হ্যাপি হরমোনগুলো কমতে থাকে। এ কারণে অবসাদ, দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা ও খিটখিটে মেজাজসহ নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।

রক্তশূন্যতা: বি৬ হিমোগ্লোবিন তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এ জন্য এই ভিটামিনের অভাব হলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এ কারণে দুর্বল অনুভব, কাজে অমনোযোগী হওয়া, মাথা ঘুরানোসহ নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ঘুম না হওয়া: বি৬ মেলাটোনিন তৈরিতে সহায়তা করে, যা মানুষের ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এ জন্য বি৬-এর অভাবে অনিদ্রায় ভোগে থাকেন রোগী।

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা: গুরুত্বপূর্ণ এই ভিটামিনের অভাবে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। কেননা, বি৬ শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে।

ভিটামিন বি৬-এর অভাব পূরণের উপায়: বি৬ শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ০.৫ থেকে ১ মিলিগ্রাম, বড়দের জন্য ১.৩ মিলিগ্রাম প্রয়োজন হয়। ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের জন্য প্রয়োজন ১.৭ মিলিগ্রাম ও নারীদের জন্য ১.৫ মিলিগ্রাম। বিভিন্ন খাবারের মধ্যে ভিটামিন বি৬ রয়েছে। যেমন- দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, কলা, ছোলা, গোটা শস্য, লাল চাল, পালং শাক, সয়াবিন ইত্যাদি খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত তাপে দীর্ঘক্ষণ রান্না করা হলে ভিটামিন বি৬ এর গুণাগুণ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

বি৬ এমন একটি উপাদান, যা কম থাকলে সমস্যা, আবার বেশি হলেও জটিলতা। এর পরিমাণ যদি শরীরে বেশি হয়, তাহলে টক্সিসিটি হয়। এ ক্ষেত্রে বমি, বমি বমি ভাব, রোদে যেতে না পারা, শরীর দুর্বল অনুভবসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত শাক-সবজি, মাছ-মাংস ও ডালজাতীয় খাবার খাওয়া হলে বি৬ এর ঘাটতি হয় না। কিন্তু যেসব ওষুধ বি৬ এর পরিমাণ কমায়, সেসব নেয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে।

ঠিকানা/এএস 

কমেন্ট বক্স