দেশীয় প্রযুক্তিতে বাঙ্কার বাস্টার তৈরি করছে ভারত। অগ্নি-৫ ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইলের দুইটি ভার্সান তৈরি হচ্ছে দেশটিতে। খবর ডয়চে ভেলের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এই অগ্নি-পাঁচের নতুন ভার্সন তৈরি করছে। এই অগ্নি-পাঁচ মাটি ৮০ থেকে ১০০ মিটার গভীরে গিয়ে কংক্রিটের আস্তরণ ভেদ করতে পারবে বলে দাবি করা হচ্ছে। সাড়ে ৭ হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করে নিয়ে যেতে পারবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।
এই ক্ষেপণাস্ত্রের দুইটি ভার্সন থাকবে। একটি আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক নিয়ে বাঙ্কার বাস্টারের কাজ করবে। যাবে সুপারসনিক গতিতে। অন্যটি পাঁচ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারবে।
মার্কিন বাঙ্কার বাস্টারের মতো
সম্প্রতি ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে বাঙ্কার বাস্টার বোমা জিবিইউ ৫৭ ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ট্রাম্প দাবি করেছেন। ভারতের অগ্নি-পাঁচ-ও যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার বাস্টার জিবিইউ ৫৭-র মতোই শক্তিশালী হবে বলে দাবি করা হয়েছে।
বাঙ্কার বাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র হলো এক বিশেষ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র যা মাটির গভীরে ঢুকে লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে এবং মিলিটারি বাংকার, কম্যান্ড সেন্টার, মিসাইল রাখার জায়গা ও অস্ত্রভাণ্ডারে গিয়ে আঘাত করতে পারে।
সাধারণ যুদ্ধাস্ত্র বা বোমা মাটির উপর গিয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু বাঙ্কার বাস্টার মাটির ভিতর ঢুকে কংক্রিটে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।
কেন এই বাঙ্কার বাস্টার জরুরি?
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটোন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেছেন, এটা একটা ডেটারেন্ট হিসেবে কাজ করবে। যেকোনো দেশের মাসল পাওয়ার বাড়ানোর দরকার হয়। কোনো সন্দেহ নেই, ভারতের সামরিক বাহিনীর কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
উৎপল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই অস্ত্র মাটির গভীরে চলে যেতে পারে। কয়েকটা পর্যায়ে এর ডেটোনেশন হয়। প্রথমে উপরে হয়, তারপর ভিতরে ঢুকে বারবার তা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। এটা নির্দিষ্ট একটি কোণে রাখতে পারলে টার্গেটে সবচেয়ে ভয়ংকর আঘাত করতে পারে। তাই এই অ্যাঙ্গেল বা কোণটা খুবই জরুরি।
তিনি জানিয়েছেন, এখন মার্কিন বাঙ্কার বাস্টার দেখার পর ভারতের এই প্রয়াস নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে ভারত আগেই এই অস্ত্র বানাবার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
আধুনিক যুদ্ধে এই বাঙ্কার বাস্টার খুব জরুরি বলে মানা হয়। কারণ, অন্য দেশের কম্যান্ড ও কন্ট্রোল কেন্দ্রগুলি এখন মাটির নিচে থাকে। অস্ত্র, জ্বালানি, রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্রও মাটির তলায় রাখা হয়। সেগুলিতে আঘাত করতে চাইলে বাঙ্কার বাস্টার দরকার হয়। সেখানেই এর গুরুত্ব।
ঠিকানা/এসআর