বড় দুর্যোগের কবলে পড়েছে ভারতের হিমাচল প্রদেশ। রাজ্যটিতে টানা ভারী বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে কমপক্ষে ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। সরকার জানিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যটিতে প্রায় ৪০০ কোটি রুপি ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, হিমাচলের সব জেলায় আগামী সোমবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এ বছরের ২০ জুন থেকে হিমাচলে বর্ষা শুরু হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও রাজ্যটি ক্ষতির শিকার হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুধু মাণ্ডি জেলায়ই ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪০ জন। এ ছাড়া কাংরা জেলায় ১৩ জন, চাম্বায় ৬ জন এবং শিমলায় ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নৌর, কুল্লুর মতো কয়েকটি জেলা থেকেও মৃত্যুর খবর এসেছে। রাজ্যজুড়ে আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে কয়েকশত ঘরবাড়ি। এনডিটিভি জানিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যটির ১৪টি সেতু ভেঙে গেছে। শতাধিক গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া রাজ্যটিতে পাঁচ শতাধিক রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, পানি ও খাদ্যের সংকটে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এর ফলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও রাজস্ব দপ্তরের বিশেষ সচিব ডি সি রানা বলেছেন, আমরা এ পর্যন্ত ৪০০ কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতি রেকর্ড করেছি। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি এর চেয়ে বেশি হতে পারে। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করা।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, শুধু হিমাচল নয়, টানা বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত গুজরাট ও রাজস্থানের জন্যও কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সাহায্য দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড ও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। পর্যাপ্ত এনডিআরএফ (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স) টিম মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনে সব ধরনের সাহায্য দেওয়া হবে।’
ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভয়াবহ সব দৃশ্য উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নদীগুলো কাদা ও ধ্বংসাবশেষে ভরে গেছে। আর সেই পানি ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, সম্পূর্ণ গ্রাম ও শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয় মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
ঠিকানা/এনআই