ভারত সরকার গত সপ্তাহে দুই হাজার ৩৫৫টি অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে নির্দেশ দেওয়ার পর এক্স ৮ জুলাই (মঙ্গলবার) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এএফপি এদিন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কনটেন্ট অপসারণে সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারত। তবে ব্লক করা অনেক অ্যাকাউন্ট কয়েক ঘণ্টা পরই পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল।
অন্যদিকে এ পদক্ষেপে ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি।
এক্সের গ্লোবাল গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স দল তাদের প্ল্যাটফরমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত সরকার গত ৩ জুলাই এক্সকে দুই হাজার ৩৫৫টি অ্যাকাউন্ট ব্লক করার নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের অ্যাকাউন্টও রয়েছে।
তারা আরো জানিয়েছে, দেশটির তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কোনো যুক্তি না দেখিয়েই এক ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে ও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক রাখার নির্দেশ দেয়।
অ্যাকাউন্টগুলো শনিবার রাতে বন্ধ করা হয়েছিল। পরে রবিবার থেকে ফের চালু করা হয়।
ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘সরকারের এই নির্দেশ না মানলে ফৌজাদারি অপরাধ হতে পারত। জনগণের চাপের মুখে দেশটির সরকার রয়টার্সের অ্যাকাউন্ট দুটি পুনরায় চালু করার অনুরোধ করে।
এ ব্লকের আদেশের কারণে ভারতে চলমান প্রেস সেন্সরশিপ নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ২০১৪ সালে হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত সংবাদপত্র ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন অস্থিরতার সময় নয়াদিল্লি নিয়মিতভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেছে। কাশ্মীরে হামলার পর উসকানিমূলক বিষয়বস্তু ছড়ানোর অভিযোগে এপ্রিল মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর কঠোর ব্যবস্থা নেয় দেশটি। সে সময় তারা এক ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করে, যার মধ্যে অনেকগুলো পরবর্তীতে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া জাতিগত সহিংসতার প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সাল থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে প্রায় সময়ই ইন্টারনেট বন্ধ করেছে নয়াদিল্লি। ভারতে কোটি কোটি মানুষ বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা মোবাইল ইন্টারনেটের সুবিধা পায়। সেখানে বিভ্রান্তি রোধ করার উপায় হিসেবে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে ন্যায়সংগত দাবি করে নয়াদিল্লি।
অন্যদিকে এক্সের দাবি, এ বিষয়ে তারা সব ধরনের আইনি বিকল্প অনুসন্ধান করছে। তবে ভারতীয় আইনে তাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ বলে জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া এক্সের ওই বিবৃতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবহারকারীদের আদালতের মাধ্যমে আইনি প্রতিকার গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঠিকানা/এএস