প্রতিনিধি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচার চর, নামাপাড়া ও নতুন চর এলাকায় একের পর এক খড়ের গাদায় রহস্যময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত এক সপ্তাহে রাতের আঁধারে সংঘটিত এসব অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে সংরক্ষিত শত শত খড়ের স্তুপ। ভোর হতেই চোখে পড়ে ছাই হয়ে যাওয়া খড়ের স্তুপ, আর কৃষকের হৃদয়ে জমে ওঠে নতুন এক আশঙ্কা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা গোপনে খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলেন, রাতভর জেগে পাহারা দেওয়ার পরও থামছে না এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড। এতে চরম খাদ্যসংকটের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, ‘‘আমরা গরুর জন্য কষ্ট করে খড় তুলে রেখেছি, এখন তো খাবারই থাকছে না। এক রাত আগুন লাগছে আমার বাড়িতে, পরের দিন পাশের বাড়িতে। আমরা ঘুমাতে পারি না।’’
স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিমকে জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান সেলিম বলেন, প্রতিদিন রাতেই খড়ের গাদা পুড়ে যাচ্ছে। কে বা কারা এসব করছে তা স্পষ্ট নয়। নাশকতার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এ পর্যন্ত সবুজ মিয়া, ফারুক, আব্দুল মোতালেব, স্বপন, মঞ্জু ও সায়েমসহ একাধিক কৃষকের খড়ের গাদা সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষক এবাদুল ও আসকর আলী যুগ্মভাবে জানান, আমরা আগুন দেখে দৌড়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু কিছুই বাঁচাতে পারিনি। সব শেষ হয়ে গেছ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয়ভাবে পাহারা দিলেও এখন পর্যন্ত কাউকে ধরা সম্ভব হয়নি। এতে করে এলাকায় বিরাজ করছে ভয় ও অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে যারা গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তারা পড়েছেন চরম সংকটে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে যেই থাকুক না কেন, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতা এবং এলাকাজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
ঠিকানা/এসআর