Thikana News
২৭ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাতে বাস্তুচ্যুত পৌনে দুই লাখ মানুষ

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাতে বাস্তুচ্যুত পৌনে দুই লাখ মানুষ ছবি সংগৃহীত
সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া তৃতীয় দিনের মতো পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে। এই সংঘাত আরও বিস্তৃত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং তিন দিনে উভয় দেশে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে থাইল্যান্ডে ১৯ জন (১৩ বেসামরিক, ৬ সেনা) এবং কম্বোডিয়ায় ১৩ জন (৮ বেসামরিক, ৩ সেনা) রয়েছেন। কম্বোডিয়া অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ব্যাংকক থেকে জোরালো সাড়া মেলেনি।

শনিবার (২৬ জুলাই) সংঘাতের তৃতীয় দিনে থাইল্যান্ডের উপকূলীয় প্রদেশ ত্রাত এবং কম্বোডিয়ার পুরসাত প্রদেশে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, যা সংঘাতের অন্যান্য কেন্দ্র থেকে শতাধিক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুরিন, উবন রাতচাথানি ও শ্রিসাকেত প্রদেশেও সংঘাত চলছে এবং আটটি জেলায় সামরিক আইন জারি করা হয়েছে। উভয় দেশেই প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে (থাইল্যান্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার, কম্বোডিয়ায় ৩৫ হাজার)।

উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনেছে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনী বেসামরিক এলাকাগুলোতে কামানের গোলা ও রকেট ছুড়ছে। অন্যদিকে কম্বোডিয়া অভিযোগ করেছে, থাই বাহিনী বিতর্কিত ক্লাস্টার (গুচ্ছ) বোমা ব্যবহার করছে, যদিও থাইল্যান্ড এই অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে এই সংঘাতের মূল কারণ শত বছরের বেশি পুরোনো সীমান্ত বিরোধ। ১৯০৭ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সীমানা মানচিত্র নিয়ে থাইল্যান্ডের আপত্তি রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে বরাবরই আদালতের রায় কম্বোডিয়ার পক্ষে গেছে। এই সংঘাতের বড় শিকার হচ্ছেন উভয় দেশের সাধারণ মানুষ। রয়টার্সের প্রতিবেদনে থাইল্যান্ডের শ্রিসাকেত প্রদেশের মানুষের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৫ হাজার মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।

গত মে মাসে সীমান্তে সংঘর্ষে এক কম্বোডীয় সেনা নিহত হওয়ার পর এবং সম্প্রতি স্থলমাইন বিস্ফোরণে থাইল্যান্ডের এক সেনা আহত হওয়ার জেরে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার থাইল্যান্ড কম্বোডিয়া থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেয় এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকেও ব্যাংকক থেকে বহিষ্কার করে। এর পরদিনই সংঘাত শুরু হয়।

শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জাতিসংঘে কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত চেয়া কেও অবিলম্বে শর্তহীন যুদ্ধবিরতি এবং সীমান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। তবে থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়ামপোংসা বলেছেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনা এগিয়ে নিতে কম্বোডিয়ার উচিত সংঘাত অবসানের জন্য প্রকৃত আন্তরিকতা দেখানো।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমসহ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এই সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে, তবে থাইল্যান্ড এই ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের সংশ্লিষ্টতা চায় না।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স