Thikana News
০৫ অগাস্ট ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫
মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধ

সৌদিতে ৩ দিনে ১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সৌদিতে ৩ দিনে ১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবে বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের গতি রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার দেশটিতে নতুন করে আরও দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ফলে এ নিয়ে মাত্র তিন দিনেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে দোষী সাব্যস্ত দু’জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে শনিবার ও রবিবার দেশটিতে মোট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়; যাদের বেশিরভাগই বিদেশি নাগরিক এবং মাদক সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডিত।
২০২২ সালের মার্চের পর দেশটিতে সবচেয়ে কম সময়ে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা এটি। ওই বছর দেশটিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে একদিনেই ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সেই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। 
এসপিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ও রবিবার যাদের সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৩ জন হাশিশ (গাঁজার মতো মাদক) ও একজন কোকেন পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

সৌদি আরবের সরকারি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এএফপির পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশটিতে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে কেবল মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধের দায়ে ১৬১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সৌদি। তাদের মধ্যে ১৩৬ জনই বিদেশি নাগরিক।
 
সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার নজিরবিহীন গতিতে বৃদ্ধি করেছে সৌদি আরব। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মাদক চোরাচালান দমনে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় উপসাগরীয় দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকরের এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সৌদি আরবে ২০২৪ সালে ৩৩৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়; যা ১৯৯০-এর দশকে সর্বোচ্চ এই সাজা কার্যকরের রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে সবেচেয়ে বেশি। চলতি বছরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা গত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে মৃত্যুদণ্ড বাতিলের পক্ষে জনমত গঠনের কাজ করছে রিপ্রাইভ নামের একটি এনজিও। রিপ্রাইভের প্রধান নির্বাহী জিদ বাসিওনি বলেছেন, সৌদি আরবে হাশিশ সংশ্লিষ্ট অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বোচ্চ এই সাজা কার্যকরের বেশিরভাগই বিদেশিদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী যেখানে হাশিশের ব্যবহার ও মালিকানাকে অপরাধ হিসেবে না দেখার প্রবণতা বাড়ছে, সেখানে এই প্রবণতা উদ্বেগজনক।

বিশ্লেষকরা ২০২৩ সালে শুরু হওয়া ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধ’র সঙ্গে বর্তমানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনার সংশ্লিষ্টতা দেখছেন। তারা বলেছেন, সেই সময় গ্রেপ্তারকৃতদের দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে।
প্রায় তিন বছর মাদক মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা স্থগিত রাখার পর ২০২২ সালের শেষ দিকে সৌদি আরবের সরকার আবারও সর্বোচ্চ এই সাজা কার্যকর করা শুরু করে। এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে ২০২২ সালে ১৯ জন, ২০২৩ সালে ২ জন এবং ২০২৪ সালে ১১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দেশে উন্মুক্ত ও সহনশীল সমাজ গঠনের যে ভাবমূর্তি তুলে ধরছে সৌদি, মৃত্যুদণ্ড জারি রাখার মাধ্যমে তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। যদিও ওই ভাবমূর্তি সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন-২০৩০’ সংস্কার পরিকল্পনার অংশ। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, মৃত্যুদণ্ড জনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজন এবং সব ধরনের আপিলের সুযোগ শেষেই কেবল এই সাজা কার্যকর করা হয়। সূত্র: এএফপি।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স