Thikana News
২৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২০ গুণ

স্বজনদের খরচ মেটাতে প্রবাসীদের পকেটে টান 

স্বজনদের খরচ মেটাতে প্রবাসীদের পকেটে টান 
‘বাজান, তুই যে টাকা পাঠাস, তাতে আর সংসার চলে না। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই। আগামী মাস থেকে আরেকটু বাড়ায় দিস।’ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সন্তানের কাছে মায়ের এমন আবদার এখন নতুন কিছু নয়। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ফলে দেশে পরিবার ও স্বজনদের ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রবাসীরা। 
নিউইয়র্কের জ্যামাইকার বাসিন্দা ফারুক আহমেদ ঠিকানাকে জানান, করোনা মহামারীর পর বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। খোদ যুক্তরাষ্ট্র এর বাইরে ছিল না। করোনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন তা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম এখনো লাগামহীন। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে। 
ফারুক বলেন, দেশে বাবা-মা এবং স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ পরিবারের মাসের খরচ হিসাবে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতেন, এখন তা পাঠালে আর হচ্ছে না। পরিবারের অন্যান্য চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমার আয় বাড়েনি। কিন্তু ব্যয় বেড়েই চলেছে। আগে প্রতিমাসে ৫০০ ডলার পাঠালে পরিবারের লোকেরা স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারতেন। এখন ডলারের মান বেড়েছে, কমেছে টাকার। ৫০০ ডলারে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে ৫৫ হাজার কেন, লাখ টাকায়ও হচ্ছে না। 
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধা। রেমিট্যান্স পাঠিয়ে তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছেন। সেই রেমিট্যান্স যোদ্ধারাই এখন ধরাশায়ী হচ্ছেন পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতে। 
ওজোনপার্কের বাসিন্দা আশরাফ সিদ্দিকী অয়ন বলেন, আট মাস আগে বিয়ে করেছেন দেশে। পরিবারের খরচ স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে। কিন্তু গত ৪-৫ মাসে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির এতটা অবনতি হবে, কল্পনা করা যায় না। তিনি বলেন, আগে যে রেমিট্যান্স পাঠাতাম, তাতে আর হচ্ছে না। এখন প্রায় দ্বিগুন রেমিট্যান্স পাঠাতে হচ্ছে। এটা আমার জন্য কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 
ব্রুকলিনের আসাদউল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে কাঁচা বাজারে আগুন লেগেছে। সব পণ্যের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ গুন। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন- দেশের বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। এক কেজি ঢেড়শের দাম ১৬০ টাকা। পেঁপের কেজি ৬০ টাকা। টমেটোর কেজি ২০০ টাকার ওপরে। মাছ কেনার ক্ষমতা অনেকে হারিয়েছেন। গরুর মাংস সাড়ে ৯শ টাকা কেজি। ইলিশ মাছ অনেকের কাছে এখন দুঃস্বপ্নের মত। এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ মাছের দাম ২ হাজার টাকার ওপরে। এক ডজন ডিমের দাম ১৬০ টাকা। 
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই লাগামহীন অবস্থা দেখার কেউ নেই। দেশে সব কিছু যেন চলছে আল্লাহর ওয়াস্তে।  তিনি বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের মজুত ও সরবরাহ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তারপরও কেন দাম বাড়ছে হু হু করে বাড়ছে। কে দেখবে এসব?

কমেন্ট বক্স