শো’টাইম মিউজিকের আয়োজনে এবং রাইটার্স ক্লাব যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, বিখ্যাত মানুষ দেখলেই সেলফোনে ছবি তোলার পরিবর্তে উল্লিখিত তিনটি অনুশীলন দ্বারা বরং নিজেই বিখ্যাত হওয়ার দিকে আমাদের সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে।’

নিউইয়র্ক : হুমায়ুন আহমেদের স্মৃতিচারণ করছেন ছড়াকার লুৎফুর রহমান রিটন।
সকাল এগারোটায় উদ্বোধনের কথা থাকলেও তুমুল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে বিকেল তিনটা থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে হুমায়ূন আহমেদ সম্মেলন ও আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলার অনুষ্ঠান। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতেই সম্মেলন জুড়ে হলুদ পাঞ্জাবি পরে হিমুদের আনাগোনা শুরু হয়। বিপুল প্রবাসী গভীর
রাত পর্যন্ত উপভোগ করেন হুমায়ূন সম্মেলন বা মেলা।
সম্মেলনের অতিথি একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, জনপ্রিয় লেখক পূরবী বসু, টিভি ব্যক্তিত্ব বেলাল বেগ, প্রখ্যাত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, জনপ্রিয় ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, ড. জিনাত নবী, ফরহাদ হোসেন ও অন্য প্রকাশের সত্ত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলামসহ অতিথিরা দিনভর সম্মেলনে উপস্থিত থেকে নানা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সদ্য প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরী স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
হলুদ হিমুদের পাশে মেয়েরাও হলুদ শাড়ি পরে সম্মেলনে অংশ নিয়ে সম্মেলনের পুরো হিমুময় করে তোলেন। এমনকী ছোট শিশুরাও হলুদ পোশাকে সেজে মুলমঞ্চে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ফারজিন রাকিবা, ডা. আইনুন নাহার রলি চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা দেখভাল করেন। নেলী ইসলাম, ছন্দা সুলতান ও শাহীন দিলওয়ারের সঞ্চালনায় স্বরচিত কবিতা ও ছড়ার আসর বসে। এবিএম সালেহ উদ্দিন পরিচালনা করেন বই পরিচিতির আসর। লেখক হুমায়ুন আহমেদ: আমার ভালো লাগা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাকসুদা আহমেদ। সহযোগিতায় ছিলেন নেলী ইসলাম। বেনজির সিকদার রচিত পুঁথি পাঠ করেন মৃদুল আহমেদ।
রাইটার্স ক্লাবের পক্ষে বক্তব্য দেন সদস্য সচিব খালেদ সরফুদ্দিন। হুমায়ুন সাহিত্যের সৌরভ শীর্ষক আলচনায় অংশ নেন সাপ্তাহিক বাঙালি সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও ড. নুরুন নবী। সঞ্চালনা করেন ছড়াকার মনজুর কাদের।
শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে ‘আমাদের প্রজন্ম আমাদের অহঙ্কার’ সঞ্চালনা করেন আবু সাঈদ রতন। হুমায়ূন আহমেদের শিশুতোষ গল্প পাঠ ‘গল্পে গল্পে হুমায়ুন’ পর্বে গল্পদিদিমনি সাবিনা নিরু শিশুদের সাথে গল্পের আসর জমান। শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন লুৎফর রহমান রিটন, জুয়েল আইচ, কৌশিক আহমেদ, ড. নুরুন নবী ও পূরবী বসু।
আবৃত্তির অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জি এইচ আরজু। ‘গীতিকার হুমায়ুন আহমেদ’ বিষয়ে আলোচনা করেন বেলাল বেগ। সঞ্চালনা করেন শাহ ফিরোজ।
মুমু আনসারী ও নাহরীন ইসলামের যুগল কন্ঠ ‘জাগো বাহে কুনঠে সবাই’ সবাইকে চমৎকৃত করেছে।
ফরিদা ইয়াসমিন ও শামীম আরা বেগমের তত্ত্বাবধানে ও মার্জিয়া স্মৃতির কোরিওগ্রাফিতে বাফার ক্ষুদে শিল্পীদের নৃত্য পরিবেশনা প্রশংসা কুড়িয়েছে।
‘হুমায়ুন ঘনিষ্ঠদের স্মৃতিচারণ’ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম। অংশ নেন পুরবী বসু, লুৎফর রহমান রিটন, ফরহাদ হোসেন ও জুয়েল আইচ। এই পর্বে জুয়েল আইচের চমৎকার কথা ও জাদূতে দর্শকবৃন্দ বিমোহিত হন।
অুনষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সেলিম চৌধুরী, এস আই টুটুল, কৃষ্ণা তিথি, চন্দন চৌধুরী, চিত্রা রোজারিও, লিয়ানা মানহা, বাঁধন, তাসকিনুল হক। যুগলবন্দি করেন শান্তনু সাজ্জাদ ও ডা. আইনুন নাহার রলি।
মেলায় নালন্দা, রাইটার্স ক্লাব যুক্তরাষ্ট্র, সময় প্রকাশন, অন্য প্রকাশ, পঞ্চায়েত, ছড়াটেসহ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ গ্রহণ করে।
আগামী বছর চার দিনব্যাপি হুমায়ুন সম্মেলন আয়জন এবং বাংলাদেশ থেকে আরো প্রকাশকদের অংশগ্রহণের অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে ষষ্ঠ হুমায়ূন আহমেদ সম্মেলন ও আন্তর্জাতিক বাংলা বই মেলা ২০২৩ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।