Thikana News
২৩ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

এবার অবিশ্বস্ত জি এম কাদের ও তাঁর সহযোগীরা ছাড় নাও পেতে পারেন!

এবার অবিশ্বস্ত জি এম কাদের ও তাঁর সহযোগীরা ছাড় নাও পেতে পারেন!
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড ঘটাচ্ছে। দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা, এবার অবিশ্বস্ত জি এম ফরম জমাও রাখা হয়েছে। আবার তারা নির্বাচনে অংশ নেবে কি না ঠিক নেই! নির্বাচনে অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। জি এম কাদের এবং তার সহযোগীরা নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে মারাত্মক সংকটজনক অবস্থায় ফেলতেও পারেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে জাতীয় পার্টির দ্বিচারিতার পেছনে গভীর রহস্য রয়েছে। নির্বাচন-প্রশ্নে জাতীয় পার্টিতে পরস্পরবিরোধী ধারা রয়েছে। এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের বিএনপির সঙ্গে গভীর সমঝোতায় রয়েছেন। কাদেরকে আগামীতে প্রধানমন্ত্রী করা হবে বলে বিশ্বাসযোগ্য নিশ্চয়তা দেওয়ার পর তিনি বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় আসেন। জি এম কাদের ও তার জাতীয় পার্টির প্রতি শর্ত ছিল, তারা বিএনপির ছয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে একযোগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন। সেই পরিকল্পনা বিফল হওয়ার পরও কাদের বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া ছিন্ন করেননি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ কি বর্জন, তা জি এম কাদের চূড়ান্ত করতে চান বিএনপির সিদ্ধান্তের ওপর। বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়নি। তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয় কি না অনিশ্চিত। বিএনপি নির্বাচনে অংশ যদি নাও নেয়, কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি বিএনপির লন্ডন প্রবাসী নেতার সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবে। জাতীয় পার্টি এ পর্যায়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবে কি না নিশ্চিত নয়। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালানো হলেও শেষ পর্যায়ে জি এম কাদের ও তার সহযোগীরা নির্বাচনী ময়দান থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। সরকারি দল ও সরকারকে বিব্রত করাই নয়, সংকটজনক পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য কাদের ও তার সহযোগীরা অতিনাটকীয় কিছু সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা করবেন না বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।
রওশন এরশাদ কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিরঙ্কুশ সমর্থন ঘোষণায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক শেখ হাসিনার প্রতি পূর্ববর্তী কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসার দৃশ্যমান তৎপরতা জি এম কাদের ও তার সহযোগীদের হতাশ করেছে। তার কর্তৃক শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি নিরঙ্কুশ সমর্থন প্রকাশ্যে ব্যক্ত করা এবং পুনরায় শেখ হাসিনা ও তার দলের ক্ষমতায় আসায় সুস্পষ্ট আভাস পরিস্ফুট হওয়ায় জি এম কাদেরও সরকারবিরোধী অবস্থান নেওয়ার মানসিক ও রাজনৈতিক শক্তি পাচ্ছেন না। তার পরও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঝুলন্ত রাখা হয়েছে স্থূল রাজনৈতিক স্বার্থে।
জাতীয় পার্টিকে কাক্সিক্ষত আসনে ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা চান জি এম কাদের ও তার সহযোগীরা। কাদেরের কাছে এই মর্মে খবর রয়েছে, লালমনিরহাট থেকে তাকে আওয়ামী লীগ ছাড় নাও দিতে পারে। কাদেরকে একটি ভালো শিক্ষা দেওয়ার পক্ষে ক্ষমতাসীনদের অনেকেই। তার আচরণ, কার্যকলাপে অসন্তুষ্ট তারা। আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে কাদেরের পক্ষে বিজয়ী হয়ে আসা কঠিন হবে। কেবল লালমনিরহাটেই নয়, রংপুর সদরসহ বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ-ছয়টি আসন ছাড়া অন্যান্য আসন জাতীয় পার্টির জন্য নিশ্চিত নয়। আওয়ামী লীগ কাদেরপন্থীদের তেমন ছাড় দিতেও রাজি নয়। রওশন এরশাদের অবস্থানও ময়মনসিংহে সন্তোষজনক নয়। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রওশন ও তার বিশ্বস্ত অনুগামীদের ব্যাপারে নমনীয় ভূমিকা নেবেন, যা কাদের ও তার সহযোগীদের অধিকাংশেরই জন্য নন। জি এম কাদের এ অবস্থাটা ভালোভাবেই উপলব্ধি করছেন। কাদের তার নিজের ও বিশ্বস্ত সহযোগীদেরসহ জাতীয় পার্টির জন্য ৩৫ আসন নিশ্চিত করতে চান। সরকারি দলের কাছ থেকে এ নিশ্চয়তা পাওয়ার উদ্দেশ্যেই জি এম কাদের নানা নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু সরকারি মহল কাদেরকে আস্থায় নিতে পারছে না। তারা আসন ভাগাভাগির ব্যাপারটি চূড়ান্ত করবে রওশন এরশাদের মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে। এখানে কাদের ও তার একান্ত বিশ্বস্ত কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের স্থান না-ও হতে পারে।

কমেন্ট বক্স