Thikana News
২৩ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

কথা পুরাতন: নতুন করে শুরু

কথা পুরাতন: নতুন করে শুরু
গণতন্ত্র নিয়ে কথা নতুন কিছু নয়। কথা হয় গণতন্ত্র নিয়ে বা গণতন্ত্রের নামে। গণতন্ত্রের ভালো-মন্দ নিয়েও কথা হয়। শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রের নামে বা গণতন্ত্রকে আরও মজবুত, আরও উন্নত করার লক্ষ্য নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করে। বিরোধী দল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করে। গণতন্ত্র নাই, শাসকচক্র নিজেদের শাসনক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য গণমানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে একত্ববাদী বা একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করে দেশ শাসন করতে চায়। সে কারণে তারা বিরোধী দলের অস্তিত্ব বিলীন করে দিতে চায়। একত্ববাদী শাসনে এক ব্যক্তির বা এক দলের শাসন চলে। বিরোধী দলের দাবি, তাদের নেতাকর্মী এবং অন্যরা থাকে নির্বাচিত হয়েছে। অথচ নির্যাতনে, নিপীড়নে, শোষণ- বঞ্চনায়।
গণতন্ত্র নাকি আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি। আর সবই শোষণের ক্ষেত্র বা শোষণের মাত্রা প্রসারিত করে। বিরোধী দল যখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা বা পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালায়, তখন শাসকগোষ্ঠী এবং শাসক দল গণতন্ত্র রক্ষার নামেই বিরোধী দল এবং বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমন করে। বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমন করতে তারা দলীয় কর্মী বা ক্যাডার বাহিনী ব্যবহার করে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বা সীমান্ত নিরাপদ রাখতে যেসব বাহিনী ব্যবহৃত হওয়ার কথা, তাদের শাসক দল দলীয় ক্যাডারদের মতোই ব্যবহার করে। রাষ্ট্রপক্ষে এ কথা যদিও কোনোভাবেই স্বীকার করা হয় না। বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রনীতির রিপোর্ট যখন প্রকাশ পায়, তখন এসব কথা জানা যায়। এসব রিপোর্টকে সরকারি দল যেমন প্রত্যাখ্যান করে, বিরোধী দল ততোধিক হইচই করে। 'অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল'-গণতন্ত্রের এই সংজ্ঞাটিই আধুনিক বিশ্বে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা। অর্থাৎ সরকার হবে সর্বাত্মকভাবে জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। এখনো অব্রাহাম লিংকনের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা সম্পর্কে অস্ত্রে, শৌর্যে-বীর্যে যারা শক্তিশালী, সেসব দেশে অনেকটা গ্রহণযোগ্য হলেও উন্নয়নশীল, পিছিয়ে পড়া অর্থাৎ পশ্চাৎপদ, অনু- ন্নত দেশে ওই গণতন্ত্র সোনার হরিণ। বাংলাদেশে অতি সম্প্রতি অর্থাৎ গেল ৭ জানুয়ারি দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। নির্বাচনটি নিয়ে এখনো দেশে- বিদেশে নানা কথা বলাবলি হচ্ছে। সব কথার মূলকথা গণতন্ত্র। নির্বাচনে গণতন্ত্রের পথ কতটা অনুসৃত হয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গেছে। আজকের সম্পাদকীয়টি 'বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন'-এ রকম একটি প্রতিবেদন ঘিরে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৩ বছর। এই ৫৩ বছরে না নির্বাচনের বিরোধের প্রশ্ন মীমাংসিত হয়েছে, না গণতন্ত্রের প্রশ্ন সর্বজনগ্রহণীয়ভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং সংবিধানের প্রধান ও প্রথম স্তন্দ্রটি হলো গণতন্ত্র। নির্বাচন এলে গণতন্ত্রের প্রশ্ন সব দলেরই সামনে এসে দাঁড়ায়। গণতন্ত্র নিয়েই যত কথার পাঁচালি। অথচ সেখানে মীমাংসা নেই। ৫৩ বছর ধরেই গণতন্ত্রের কথা নিয়ে আলোচনা চলছে। তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। কিন্তু সমাধান নেই।
তবে কি বাংলাদেশের কোনো দলই গণতন্ত্রের প্রশ্নটি নিয়ে সমাধান চায় না? শুধু গণতন্ত্রের 'কলা' দেখিয়েই রাজনীতি করে যাওয়া? প্রশ্নটির নিষ্পত্তি হওয়া খুবই জরুরি বলে দেশের মানুষ মনে করে। নইলে হয়তো রাষ্ট্রকাঠামোর মূলেই না আঘাত লেগে বসে।

 

কমেন্ট বক্স