Thikana News
০৮ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান ‘পুনর্লিখনের’ প্রস্তাব আলী রীয়াজের

গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান ‘পুনর্লিখনের’ প্রস্তাব আলী রীয়াজের ছবি সংগৃহীত



 
এক ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা বন্ধ করতে সংবিধান সংশোধনের বিকল্প হিসেবে গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখনের প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আলী রীয়াজ।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাব দেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের এই অধ্যাপক।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচন-ব্যবস্থা সবগুলোই সুপরিকল্পিতভাবে রাজনীতিকীকরণের শিকার হয়েছে। এগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে সংবিধানের পুনর্লিখন করতে হবে। তার বাইরে আপনি প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করতে পারবেন না।’

সংবিধান পুনর্লিখনের প্রস্তাবের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান সংবিধান সংশোধনের কোনো উপায় নেই। সংবিধানের এক-তৃতীয়াংশ এমনভাবে লেখা যে তাতে হাত দেওয়া যায় না। এখানে এমন বিষয় আছে, যেগুলো না সরালে আপনি কিছু করতে পারবেন না। ঠিক এ কারণে পুনর্লিখন শব্দটা আসছে। পুনর্লিখনের পথ হিসেবে গণপরিষদের কথা বলছি। এ ছাড়া আর কোনো পথ আছে কিনা আমি জানি না।’

একজন সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সরকারপ্রধান থাকতে পারেন বলে মত দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, এ বিষয়ে ‘সার্বিক ঐক্যমতে’ পৌঁছাতে সবার সঙ্গে আলোচনার করা দরকার।

ব্যাংক ও জ্বালানি খাতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব খাতে সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর স্বার্থে নীতিমালা পরিচালিত হয়েছে। তারা নিজেদের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ঋণখেলাপিদের বিচার থেকে রক্ষা করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে বিপদাপন্ন করেছে। সরকারঘনিষ্ঠ একটি ক্ষুদ্রগোষ্ঠী জ্বালানি খাতের ভর্তুকি পকেটস্থ করেছে। এসব কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে যে অপতথ্য ও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, সেটার বিপরীতে সত্য ঘটনা তুলে ধরতে সংবাদকর্মীদের আহ্বান জানান আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে, আমি তাদেরকে বলেছি, আপনারা ঢাকায় যান, দেখুন তারপর তা তুলে ধরুন। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রচারণার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছেন সাংবাদিকেরা। আপনারা সত্য তথ্য তুলে ধরুন।’

তিনি বলেন, টেকসই গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি। আগামী ৫ মাসে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে এসব সংলাপ আয়োজন করা হবে। এই সংলাপগুলোর মাধ্যমে দেশব্যাপী নাগরিক সমাজ, সুশীল সমাজ এবং বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ সংগ্রহ করা হবে।

সংবিধান, মানবাধিকার ও গুরুতর আইন লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের বিচার নিশ্চিতকরণ, বিচারব্যবস্থা, নাগরিক প্রশাসন, সাংবিধানিক সংস্থাসমূহ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, অর্থনৈতিক নীতিমালাসহ ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক ঋণ এবং গণমাধ্যম- এসব বিষয় সংলাপে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে তিনি জানান।

ঢাকায় মোট আটটি সংলাপ হবে এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনায় চারটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের প্রত্যাশা, প্রস্তাবনা ও সুপারিশ উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করতে পারবেন। এসব সংলাপের সারসংক্ষেপ পুস্তিকা আকারে জনগণ ও গণমাধ্যমের  কাছে পৌঁছাবে সিজিএস।

সিজিএসে নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অনেক কিছু করার আছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে চাই। সে লক্ষ্যে সিজিএস ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন করছে।’

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স