Thikana News
০৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল ওয়াশিংটন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল ওয়াশিংটন



 
বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন। সোমবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ওয়াশিংটনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মত প্রকাশ করেন।

ম্যাথিউ মিলার বলেন, 'আমরা আগেই বলেছি, সমালোচকদের গ্রেপ্তার, আটক ও মুখ বন্ধ রাখার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা আইন সংস্কার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারকে স্বাগত জানাই।'

তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশ সরকারকে নতুন খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনায় নিজেদের ভাবনা যোগ করার সুযোগ দিতে উৎসাহিত করি যাতে এটি আন্তর্জাতিকমান পূরণ করতে পারে।'

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন নিয়ে যা বললেন আইনমন্ত্রী 

বাংলাদেশের বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-ডিএসএ পরিবর্তন করে তার জায়গায় ভিন্ন একটি আইন আনার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই নতুন আইনটির নামকরণ করা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় পরিবর্তন এনে এই আইনটি করা হচ্ছে।

নতুন আইনে মোট ধারা ৬০টি। এটি আগামী সেপ্টেম্বরে সংসদে বিল আকারে পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে। সেখানে এটি অনুমোদিত হবে বলেও আশার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

নতুন এই আইনের বিষয়ে অনুমোদনের পর ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধ করার জন্য এই আইনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের একটা কথা ছিল, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট থাকলে একটা মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয়। সেটাকেও আমরা ধর্তব্যের মধ্যে নিয়েছি এবং সেই কারণে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে।

এর ফলে সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি আশা করছি অবশ্যই হবে।

তবে আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের যে খবর জানা গিয়েছিল সেটি সত্য নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “পরিবর্তন করা হয়েছে(ডিএসএ), বাতিল করা হয়নি। নামটা নতুন করে দেয়া হয়েছে, কিছু ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “পরিবর্তনটা এতটাই করা হয়েছে, সেখানে যাতে কোন দ্বিধা তৈরি না হয়, সেজন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নাম রহিত করে তার পরিবর্তে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হয়েছে। ব্যাপারটা হচ্ছে, আইনের পরিবর্তন আনা হয়েছে, নামে পরিবর্তন আনা হয়েছে, অনেক জায়গায় সাজার পরিমাণ বেশি ছিল, সেটা কমানো হয়েছে, যেখানে উপধারা দিয়ে পুনরায় অপরাধ করলে সাজা ডবল হয়ে যেতো, সেটা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে। কোন সংশয় যাতে তৈরি না হয়, সেই কারণে রহিতকরণ ও হেফাজত করণের বিধান রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছি।‘’

তবে ডিএসএ-এর অধীনে যেসব মামলা করা হয়েছিল সেগুলো চলবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। কিন্তু মামলার কার্যক্রম সাইবার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী হবে।

যেসব ধারায় পরিবর্তন আসছে

সাইবার নিরাপত্তা আইনে যেসব ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ২১ ধারা।

এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোন ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো রকম প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালায় বা তাতে মদদ দেয় তাহলে সেটি অপরাধ বলে গণ্য হতো এবং এর জন্য ১০ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানার বিধান ছিল।

এই একই অপরাধ কেউ দ্বিতীয়বার করলে তার সাজা দ্বিগুণ করার বিধান ছিল। আর বারবার একই অপরাধের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা তিন কোটি টাকা জরিমানার বিধান ছিল।

এই ধারাটিতে পরিবর্তন এনে সাজার মেয়াদ ৭ বছর করা হয়েছে। আর দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলেও সাজা দ্বিগুণ হবে না।

পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার থাকছে

ডিএসএ এর ৪৩ ধারা নিয়ে বড় বিতর্ক থাকলেও সেটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

৪৩ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন যে, কোনো স্থানে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাহলে সাক্ষ্য প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছে ফেলা, পরিবর্তন হওয়ার বা করার সম্ভাবনা রয়েছে তাহলে তার, কোন পরোয়ানা ছাড়াই সেখানে তল্লাসি, সরঞ্জাম জব্দ, দেহ তল্লাসি, এবং পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারের এখতিয়ার রয়েছে।

এটি অপরিবর্তিত রাখার যুক্তি হিসেবে আইনমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে, এসব অপরাধ যেসব সরঞ্জাম ব্যবহার করে করা হয় সেটা জব্দ না করলে প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেকারণে এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

ডিএসএ'র বিভিন্ন ধারা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার পর পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তে তারা সন্তুষ্ট হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “তারা সন্তুষ্ট হবে কিনা সেটা তাদের বিষয়। আমরা সকলেই বসে দেখেছি যে, এই আইনটা যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল সেটা যাতে পূরণ করা যায় সেটার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স