Thikana News
০৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে শিল্পকলার ডিজি’র পদত্যাগ 

আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে শিল্পকলার ডিজি’র পদত্যাগ  ছবি: সংগৃহীত



 
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্যেৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই ঘোষণা দেন।

এ সময় উপস্থিত দর্শক সারি থেকে কেউ কেউ জামিল আহমেদের পদত্যাগ ‘মানা হবে না’ বলে আওয়াজ তোলেন।
অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জামিল আহমেদ পদত্যাগের কারণ হিসেবে বক্তব্যে শিল্পকলার কাজে ‘আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ’ এর অভিযোগ তুলছেন।

অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন বলেন, আমরা এই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করিনি। শিল্পকলা একাডেমির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়। জামিল আহমেদ অনুষ্ঠানে শিল্পকলার সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে জামিল আহমেদ বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় বলেছিলাম, শিল্পকলার কাজে সচিবালয় থেকে যেন কোনো হস্তক্ষেপ না করে। আসিফ নজরুল সাহেব থাকার সময় করেননি। কিন্তু ইদানিং ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ হচ্ছে। আমি এখানে আর বিস্তারিত বললাম না। এরপর নিজের পরিকল্পনা এবং তাতে সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি এই জন্য এটা সঠিক সময় মনে করি, আর মনে হয় ভবিষ্যতে কাজ করা সম্ভব হবে না এখানে। আমার পদত্যাগপত্র আপনাদের সামনে হস্তান্তর করছি আমাদের সচিবের কাছে। এরপর প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে সেই পদত্যাগপত্র সচিবের কাছে হস্তান্তর করেন জামিল আহমেদ।
এই বিষয়ে কথা বলতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
জামিল আহমেদ এবং শিল্পকলার সচিব ওয়ারেছ হোসেনকে ফোন করা হলে তারাও সাড়া দেননি।

স্থানীয় সময় রাত ৯টায় শিল্পকলার একজন কর্মকর্তা বলেন, জামিল আহমেদ তখন জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে বসে নাটক দেখছিলেন। নাটক দেখার সময় তিনি ফোন ধরেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক জামিল আহমেদকে গত ৯ সেপ্টেম্বর দুই বছরের জন্য শিল্পকলার মহাপরিচালক করে অন্তর্বর্তী সরকার।
৩০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি শিক্ষকতা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগে।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সৈয়দ জামিল ১৯৭৮ সালে ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বছরে তিনি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার টেলিভিশন প্রডিউসারস ট্রেইনিংয়ে প্রথম হন। ১৯৮৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক থেকে থিয়েটার আর্টসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

তার নির্দেশনায় মঞ্চে এসেছে ২০টিরও বেশি নাটক। এর মধ্যে রয়েছে সেলিম আল দীন রচিত ‘চাকা’, মীর মশাররফ হোসেনের ‘বিষাদসিন্ধু’, পালাগান থেকে করা ‘কমলা রানীর সাগর দিঘী’, মনসা মঙ্গল থেকে ‘বেহুলার ভাসান’, সংযাত্রা থেকে ‘সংভংচং’, রবি ঠাকুরের লেখা থেকে অবলম্বন ‘শ্যামার উড়াল’, কাশ্মীরি কবি আগা শহীদ খানের কাব্য অবলম্বনে ‘রিজওয়ান’, শহিদুল জহিরের উপন্যাস অবলম্বনে ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা', সারাহ কেইনের ‘ফোর পয়েন্ট ফোর এইট সাইকোসিস’ অবলম্বনে ‘চার দশমিক চার আট, মন্ত্রাস’ এবং একক অভিনীত নাটক বিস্ময়কর সবকিছু।

তিনি ৭০টির বেশি মঞ্চ প্রযোজনার আলোক নির্দেশনা ও ৮০টিরও বেশি নাটকের মঞ্চপরিকল্পনা করেছেন সৈয়দ জামিল আহমেদ। নিজের বিভাগ ছাড়াও দেশের বড় নাট্যদলগুলোর জন্য প্রযোজনা নির্দেশনা দিয়েছেন, ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অলাভজনক ও পেশাদার নাট্যদল ‘স্পর্ধা; ইনডিপেনডেন্ট থিয়েটার কালেকটিভ’।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স