জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ‘মব ভায়োলেন্স’ নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবে এটা দল থেকে কোনোভাবেই সমর্থন করা হয় না। এমন মন্তব্য করেছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে তিনি আরো বলছেন, এনসিপিতে বিভিন্ন মতের মানুষ এসে জড়ো হয়েছেন। এখানে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে মত প্রকাশ করে থাকতে পারেন। কিন্তু ‘মব ভায়োলেন্স’ উসকে দেয় এমন কিছু এনসিপির ফেসবুক পেজে থাকে না। এই দলের পরিচয় ব্যবহার করে কেউ যদি ‘মব’ তৈরি করতে চায়, তাকে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারি বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এই টকশোতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন বিএনপিন্থী আইনজীবীদের অন্যতম মুখ ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এ অনুষ্ঠান সরাসরি দেখা গেছে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন দুই অতিথি।
সংসদ নির্বাচন ৪০০ আসনে হলে এনসিপি ৩০০ আসনে জয় যাবে, সম্প্রতি এমন বক্তব্য রেখেছেন দলটির অন্যতম শীর্ষ নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এমন কথা ‘বাস্তবতা বিবর্জিত’ বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি বলেন, ‘এনসিপি যদি মনে তারা ৩০০ আসনে জিতবে। তাহলে তাদের আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি করা উচিত। কারণ এর মাধ্যমে তারা জনগণের রায় পেয়ে যাবে।’
এদিকে আওয়ামী লীগ নেই রাজনীতির মাঠে। এ অবস্থায় নির্বাচন হলে বিএনপি সহজে জয় পাবে, এমন ধারণা করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। কিন্তু দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজের নেতাকর্মীদের প্রায়ই মনে করিয়ে দিচ্ছেন আগামী নির্বাচন খুব ‘কঠিন’ হবে। এর কারণ সম্পর্কে রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতিও বদলে গেছে। আওয়ামী লীগ থাকতে তাদের বিরোধী রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিতো বিএনপি। এখন সেই প্রেক্ষাপট নেই। এটা একটি দিক। আবার তারেক রহমান মনে করিয়ে দিতে চান রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে হলে ভোটারদের মন জয় করেই যেতে হবে। ভোট ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। এসব বিবেচনায় নির্বাচন সহজ বিষয় হতে পারে না।
ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই বিভিন্ন স্তরের বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটাতে চাইছেন, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। আর কেন্দ্র থেকেও স্পষ্ট বলা হয়েছে, কেউ যদি ফৌজদারি অপরাধ করে, তাকে গ্রেপ্তার করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কোনো অপরাধীর দায়িত্ব বিএনপি নিবে না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয় দেওয়া প্রতিবেশি দেশ ভারতের সমালোচনা করে থাকেন এনসিপির অনেক নেতা। এটা কী দলটির নীতি? এ প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ভারতের সাধারণ মানুষদের আমরা ভালোবাসি। কিন্তু শাসকশ্রেণির যারা আমাদের নিচু হিসেবে দেখে তাদের প্রতি আমাদের বিরোধিতা আছে। আমরা চাই পারস্পরিক সম্মানবোধ থাকবে। আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক বোমা চাই না। শান্তি চাই। কিন্তু এই বোমা না থাকা কারণে আমাদের যদি হেয় করে দেখে এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।’
ঠিকানা/এসআর