Thikana News
০৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মামদানির বিজয় এবং মুসলিম ঐক্য

মুসলিম শব্দের অর্থ হচ্ছে আত্মসমর্পণকারী। অর্থাৎ নিঃস্বার্থভাবে এক আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল ধর্মপ্রাণ মানুষেরাই মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। সেই হিসাবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ মুসলিম।
মামদানির বিজয় এবং মুসলিম ঐক্য
এই মুসলিম জনসংখ্যার মধ্যে ২০ শতাংশের বাস এশিয়া মহাদেশে। তার ভেতরে অর্ধেকের বাস দক্ষিণ এশিয়ায়। এ ছাড়া বাদবাকি ৩০ কোটির বাস বিশ্বের অন্যান্য দেশে। যেমন ইউরোপে বাস করেন ৩ কোটি ৮০ লাখ মুসলমান। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে বাস করেন ৪১ লাখ ৩০ হাজার। ২০২৪ সালের এক গণনার জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মোট মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩৫ লাখের কাছাকাছি। এই সংখ্যাটা আবার ২০১৭ সালে ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজারের মতো। পিটার্সবার্গ টাইমসের মতে, ওয়ান ইলেভেনের পর আমেরিকার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। সেই হিসাবে ওয়ান ইলেভেনের পরের ছয় বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ল্যাটিন আমেরিকান বংশোদ্ভূত মুসলমানের সংখ্যা বেড়েছে ৩০ শতাংশ হারে।

আমেরিকার সবচেয়ে বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নাম ‘পিউ রিসার্স সেন্টার’। তাদের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে মোট মুসলমানের মধ্যে ২৩ শতাংশই হচ্ছে ধর্মান্তরিত মুসলমান। যাদের জন্ম আমেরিকার অমুসলিম পরিবারে। আর ৬৫ ভাগ হলেন অভিবাসী সম্প্রদায়ের লোক, বাকি ৩৫ ভাগ হলেন জন্মসূত্রে নাগরিক। এই ধর্মান্তরিত মুসলমানদের মধ্যে উঠতি বয়সী জনসংখ্যার হার বেশি, যেমন এদের মধ্যে ৩০ শতাংশ মুসলমানের বয়স ১৮ থেকে ২৯-এর ভেতরে। অর্থাৎ আমেরিকার জীবনপ্রণালিতে বর্ণবৈষম্য একটি মানবাধিকার পরিপন্থী বিষয় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এলেও ইসলাম ধর্মে ওই বিষয়টা কখনোই প্রাধান্য পায়নি বরং সব মানুষের অধিকার সমান, এমন মতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েই যুবকদের ভেতরে ইসলামের অনুকরণ ধ্বনিত হয়েছে ভিন্ন মাত্রায় এবং সেখান থেকেই যুবকদের ভেতরে ইসলামের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ বেশি। পিউ রিসার্চ সেন্টার আরও একটি উপাত্ত উপস্থাপনা শেষে জানিয়েছে, চলতি শতাব্দীর শেষ দিকে বিশ্বে মুসলিম জনসংখ্যার হার হবে সর্বাধিক। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথমবার মুসলিম জনসংখ্যা খ্রিষ্টান জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকান মুসলমানরা শিক্ষাগত অবস্থানের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। অবশ্য প্রথম স্থানটি দীর্ঘদিন থেকে ধরে রেখেছে ইহুদি সম্প্রদায়। মেধার দিক দিয়েও তারা অগ্রসরমান এক জাতি। পিউ রিসার্সের পরিচালক ‘কুপার ম্যান’ এর মতে, বিশ্বের ধর্মীয় চিত্র দ্রুত একটা পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। যেমন নাস্তিক বা সংশয়বাদী, যারা কোনো ধর্মেই বিশ্বাসী নয়, তাদের সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে বর্তমান সময়কালের চেয়ে ক্ষুদ্র এক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে। তার কারণ হিসেবে উল্লেখিত বিষয় হচ্ছে এই শ্রেণির মানুষদের মধ্যে প্রজনন হার খুবই কম। আবার এসব নাস্তিক মানুষের সন্তানদের মধ্য থেকে কিছুসংখ্যক আস্তিক মানুষেরও জন্ম হয়ে থাকে, যারা তাদের পূর্বসূরিদের পথ থেকে সরে গিয়ে নিজেদের ধারণাকে লালন করে থাকেন। একসময় খ্রিষ্টান ও ইহুদি ধর্মের পরে তৃতীয় স্থানে ছিল ইসলাম ধর্ম। কিন্তু এখন এক ধাপ এগিয়ে এসে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের নাম।
ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল পলিসি ২০১৭ সালের এক জরিপের তথ্য প্রদানের সময় উল্লেখ করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের মধ্যে ২৬ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ, ১৮ শতাংশ এশীয়, ১৮ শতাংশ আরব, ৯ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ, ৭ শতাংশ মিশ্র এবং ৫ শতাংশ হিস্পানিক সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে।
ইতিহাসবিদদের মতে, মুসলিমরা ষোড়শ শতকের প্রথম দিকে আমেরিকার নিউ মেক্সিকো ও অ্যারিজোনার সীমান্ত দিয়ে দাস হিসেবে প্রবেশ করেছিল এবং পরে ১৮৮০ থেকে ১৯১৪Ñএই সময়কালের ভেতরে উসমানীয় সাম্রাজ্য এবং তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত থেকেও কয়েক হাজার ইসলাম ধর্মাবলম্বীর অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। আনুমানিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ আফ্রিকান মানুষও আমেরিকায় বসতি স্থাপনের মধ্য দিয়ে ইসলামকে ছড়িয়ে দিয়েছিল বিশ্বময়। এখন দুনিয়ায় মোট ৫৬টি মুসলিম দেশ রয়েছে এবং বিশ্বের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বী। সেই হিসাবে ৭৫৫ কোটি মানুষের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা হলো ১৯০ কোটি। ভ্যাটিকানের চলতি বছরের ইয়ার বুকের তথ্য অনুযায়ী, ইসলাম ধর্ম এ পর্যন্ত একমাত্র ধর্ম, যাদের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন তাদের হিসাবমতে, মুসলমানরা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ, অপরদিকে রোমান ক্যাথলিকদের সংখ্যা ১৭ শতাংশের মতো। তবে বর্তমানে তাদের হিসাব অনুযায়ী মুসলিমদের এই বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি আর সঠিক নয়। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের জেরে, বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি মুসলিম ইসরায়েলের নানামুখী আক্রমণের শিকারে পরিণত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। যে আক্রমণের পেছনে প্রচ্ছন্ন মদদদাতার ভূমিকা রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের। তার পরও যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু অভিবাসী-সমৃদ্ধ দেশ, সে কারণে এই দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সব বিষয়েই অভিবাসীদের ভূমিকা ও সামগ্রিক অবদান ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। সেই ইতিহাসের তথ্যমতে, ১৮৮৮ সালে আলেকজান্ডার রাসেল নামক এক অ্যাংলো আমেরিকান মুসলিমের খবর প্রথম চোখে পড়েছিল ইতিহাসবিদদের এবং সেই ইতিহাসই সাক্ষ্য দেয়, ইউসুফ বেন আলি নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিম জর্জ ওয়াশিংটনের সহযোদ্ধা ছিলেন। আফ্রিকা থেকে যখন ক্রীতদাস হিসেবে কৃষ্ণাঙ্গদের এ দেশে নিয়ে আসা হয়েছিল, তারা সবাই মুসলমান ছিলেন। পরে তাদের সবাইকে জোরপূর্বক খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছিল। আস্তে আস্তে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ধর্মীয় প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন তারা।

১৯২৯ সালে সাউথ ডাকোটার সিওক্স ফলস সিটিতে সর্বপ্রথম একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়ে প্রকাশ্যে ইবাদতের ডাক সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন এক আল্লাহয় বিশ্বাসী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। সত্তর দশকের শুরুতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের রিভার সাউথ অ্যাভিনিউতে আরবরা প্রথম একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশি মুসলমানরা সিটির দ্বিতীয় মসজিদ ম্যানহাটনের মদিনা মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। এখন তো নিউইয়র্ক নগরকে বলা হয় মসজিদের নগর। এই শহরে মসজিদের সংখ্যা ২৫৭টি, দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া। সেখানে রয়েছে ২৪৬টি মসজিদ। বলা হয়ে থাকে, আমেরিকার ছোট-বড় এমন কোনো শহর নেই, যেখানে মসজিদ নেই। যদিও মসজিদ-কেন্দ্রিক মুসলমানদের নানা সময়ে প্রতিক্রিয়াশীলদের হামলার মুখে পড়ে জানমালের ক্ষতি সামলাতে হয়েছে, তার পরও আমেরিকায় মসজিদের সংখ্যা বেড়েছে। যেমন ২০১০ সালে সারা দেশে মসজিদের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১০৬টি, বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৬৯টিতে। কোনো কোনো তথ্যমতে এর সংখ্যা তিন হাজারেরও উপরে। এই ক্রমবর্ধমান মসজিদের সংখ্যা প্রমাণ করে, কী হারে এ দেশে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই দেশের আদমশুমারিতে কোনো মানুষের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকে না। তাই শহরওয়ারি মুসলমানদের সংখ্যাতত্ত্বের প্রকৃত হিসাব পাওয়া অনেকটাই দুষ্কর। এ অবস্থায়ও নিউইয়র্ক নগরীকে বলা হয়ে থাকে সর্বাধিক মুসলিম অধ্যুষিত একটি নগরী। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাটিক রাজনীতিবিদদের আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত এই নিউইয়র্কে ২০১৮ সালের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ৭ লাখ ৫০ হাজারের মতো মুসলমান বাস করেন। যাদের ভেতরে এশিয়ান জনগোষ্ঠীর হার বেশি। সর্বশেষ শুমারির হিসাব অনুযায়ী, এই সিটিতে বসবাসরত এশিয়ান আমেরিকান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হচ্ছে ১৫ লাখের কাছাকাছি, যা মোট জনসংখ্যার ১৭ ভাগ। আবার এই শহরে তিন লাখের মতো বাঙালি বাস করেন, যা অন্য যেকোনো শহরের চেয়ে বেশি। আবার নথিপত্রহীন বাঙালির বাসও এই শহরে অন্য শহরের চেয়ে বেশি। বলা হয়ে থাকে, প্রায় ১৯ হাজারের মতো নথিপত্র ছাড়া অর্থাৎ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি অভিবাসী বাস করেন নিউইয়র্কে। যদিও তারা বৈধ অভিবাসীদের চেয়ে নামমাত্র মজুরির বিনিময়ে এবং সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই মানবেতর জীবনযাপন করে থাকেন এই শহরে। তার পরও পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সুবিধা এবং প্রতিবেশী বাঙালিদের সাহায্য-সহযোগিতার কথা মাথায় রেখেই মাথা গোঁজার জন্য নিউইয়র্ক শহরকেই বেছে নেন অনেকে। যদিও এই শহরে বাসা ভাড়া ক্রমেই আকাশ উচ্চতায় গিয়ে পৌঁছেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও সাধারণ মানুষকে একেবারে দিশেহারা করে দেয়। তার পরও নিউইয়র্ক অনেকের কাছে প্রিয় একটি শহর।

অনেকে বলে থাকেন, নিউইয়র্ক হচ্ছে ‘বিশ্বের রাজধানী’। এ অবস্থায় এই শহরের বাসিন্দাদের নানামুখী সমস্যা নিয়ে নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয় সময় সময়, যেমন নাইন ইলেভেনের পরে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের মধ্যে দিন গুজরান করেছেন এই শহরের মুসলিম বাসিন্দারা, কখন যে কীভাবে কার ওপর হামলা হয়, এই এক ভয়ে অন্ধকার গৃহকোণে বসে আতঙ্কে দিন কাটিয়েছেন কেউ কেউ। সেই নিউইয়র্ক নগরীতে গত ২৪ জুন মেয়র নির্বাচনের প্রাইমারি ভোট অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। নির্বাচনে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোর মতো প্রার্থীকে একেবারে ধরাশায়ী করে ভূমিধস বিজয় ছিনিয়ে আনলেন যিনি, তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মুসলিম যুবক, মাত্র ২৩ বছর বয়সী ‘জোহরান মামদানি’। যিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী। যদিও প্রতিপক্ষের কেউ কেউ তাকে ‘কমিউনিস্ট’ বলেও বিদ্রƒপ করে থাকেন। যেমন নির্বাচন-উত্তর সময়কালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও একইভাবে বিদ্রƒপ করে এমন কিছু কথা বললেন, যেসব কথা রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তির মুখে শোভা পায় না। সেভাবেই তিনি কথাগুলো বললেন। তার মতে, মামদানি হলো শতভাগ কমিউনিস্ট-পাগল, তার চেহারা বিশ্রী, কণ্ঠস্বর বিরক্তিকর, আর বুদ্ধিও কম। শুধু মামদানি যে ট্রাম্পের বিদ্রƒপের শিকার তেমনটা কিন্তু নয়, যেসব রাজনীতিবিদ তাকে সমর্থন দিয়েছেন, তাদেরকেও ছাড়লেন না তিনি। সিনেটের উল্লেখযোগ্য নেতা চাক শ্যুমারকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘আমাদের মহান ফিলিস্তিনি সিনেটর’। আসলে মামদানি তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে ‘জাস্টিস ফর প্যালেস্টাইন’ আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সেটা নিয়েই এত ক্ষোভ প্রেসিডেন্টের। তা ছাড়া মামদানি আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে মেয়র হিসেবে যদি শপথ নিতে পারেন, তাহলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি নিউইয়র্কে ট্রাম্পের কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে দেবেন না। এটাও একটা ক্ষোভের কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের। যেহেতু মামদানি একজন মুসলিম পিতার সন্তান, তবে তিনি প্র্যাকটিসিং মুসলিম কি না, তা নিয়ে সাধারণ ভোটারের মাথায় কাজ করেনি। ২৪ জুনের প্রাইমারি নির্বাচনের সময় দেখা গেছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে তারাও সাধারণ ভোটারের কাছে ভোট ভিক্ষা করছেন। সন্দেহ নেই, মামদানিকে জিতিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ‘মুসলিম পিতার সন্তান’ বিষয়টাও ব্যাপক মাত্রায় কাজ করেছে ভোটারদের মধ্যে, যেহেতু ট্রাম্পের আমলের আগের চার বছরে মুসলিমদের সম্পর্কে এতটা ঘৃণা দেখাননি তিনি। যদিও মুসলিম দেশগুলো সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে কিন্তু দ্বিতীয়বারের শাসনক্ষমতা গ্রহণ করেই খুব জোরের সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন কথাগুলো, আর তা হলো, ‘যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান প্রবেশাধিকার বন্ধে আমি যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম, এবার কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও সরব না’। এটা একটা প্রমাণিত সত্য বিষয় আর তা হলো ট্রাম্পের শেষের ওই আমলের শুরু থেকেই মুসলিম বিদ্বেষের পরিমাণ বেড়েছে ৯০ শতাংশের বেশি। অনেক মুসলিম দেশের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। অভিবাসী বিতাড়নের নামে অভিবাসীদের ওপর যেভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে, তা চূড়ান্ত মাত্রার বর্বরতার শামিল। এই অবস্থায় নিউইয়র্ক সিটির অনুষ্ঠিতব্য নভেম্বরের মেয়র নির্বাচনে যেন এবারের মতো মুসলিম ঐক্য বজায় থাকে, সেই বিষয়টা মাথায় রেখেই সমাজের অগ্রসরমান মানুষদের কাজ করে যেতে হবে।
 

কমেন্ট বক্স