Thikana News
১৮ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশি স্টুডেন্টদের ব্যাপারে সতর্ক যুক্তরাষ্ট্র 

বাংলাদেশি স্টুডেন্টদের ব্যাপারে সতর্ক যুক্তরাষ্ট্র 
বাংলাদেশের তরুণ ও স্টুডেন্টদের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ফলে সরকারের পতন হয়েছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া স্টুডেন্ট এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। সেই সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে। জুলাই ও আগস্টের আন্দোলন বাংলাদেশের জন্য যেমন একটি শিক্ষা, সেই সঙ্গে এটি যেকোনো দেশের জন্য শিক্ষা। বাংলাদেশের স্টুডেন্টরা বিপ্লব করতে পারে, এটি একটি দৃষ্টান্তও।
যুক্তরাষ্ট্র চাইছে না কোনো দেশ থেকে এমন কোনো স্টুডেন্ট এ দেশে আসুক, যারা এখানে এসে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা দেশের কোথাও আন্দোলন করুক কিংবা এখানকার সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলক। বিশেষ করে, বাইডেন প্রশাসনের আমলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন যুদ্ধের সময়ে কিছুসংখ্যক বাংলাদেশি স্টুডেন্ট এখানে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, সমর্থন দিয়েছে, স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া সেই সব স্টুডেন্টকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় এমন স্টুডেন্টরাই এ দেশে আসবে, যারা এখানে আসার পর লেখাপড়া করবে। লেখাপড়া শেষ করার পর ওপিটি সুযোগ থাকলে সেটি করবে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে যে নিয়ম রয়েছে এবং এক্সচেঞ্জ ভিজিটরের যে নিয়ম রয়েছে, সেসব নিয়ম মানবে। এর কোনো ব্যতিক্রম করবে না। এসব বিষয় তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই স্টুডেন্টদের বাছাই করবে। তারা এটাও চাইছে না, এখানে স্টুডেন্টরা লেখাপড়া করতে আসার পর অবৈধভাবে ও বিনা অনুমতিতে কাজ করুক, লেখাপড়া বাদ দিয়ে তারা অন্য কিছু করুক। কারণ একজন স্টুডেন্ট এখানে আসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যেমন সুযোগ ও সহায়তা দিয়ে থাকে, তেমনি স্টুডেন্টদের টিউশন ফি বাবদ অনেক অর্থ খরচ হয়। কিন্তু এমন অনেক স্টুডেন্ট আছেন, যারা এখানে এসে ইউনিভার্সিটির অনুমতি ছাড়াই কাজ করেন ও দেশে অর্থ পাঠান। ফলে যেখানে এ দেশে শিক্ষাব্যয়ের জন্য অর্থ আসার কথা, সেটির পরিবর্তে অনেক অর্থ এখান থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন থেকে ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব সোর্সে প্রত্যেক স্টুডেন্টের বিষয়ে খবর নেবে। যারা এখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পড়তে ও এক্সচেঞ্জ ভিজিটর হিসেবে আসবেন, তাদের সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এটি পর্যালোচনা করার পর ওই স্টুডেন্টকে ভিসা দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনো স্টুডেন্ট তার ফেসবুকসহ সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট থাকার পরও মিথ্যা তথ্য দিলে তা ধরা পড়লে ভিসা পাবে না। এ ছাড়া কেউ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও নীতিবিরোধী কোনো পোস্ট বা অন্য কারও পোস্ট শেয়ার, লাইক, কমেন্ট করলে তারা ভিসা পাওয়ার উপযুক্ত হবেন না। বিশেষ করে, যারা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে ও ইসরায়েলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক কথাবার্তা বলেছেন, সেসব বিষয়ও আমেরিকার অবস্থান বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, কেউ আগে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করত কিন্তু এখন করছে না, এমন হলেও তথ্য দিতে হবে। কারণ তারা পাঁচ বছরের হিস্ট্রি চায়। পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি কোন কোন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেছেন, সেখানে তিনি কী কী পোস্ট দিয়েছেন, সেসব পোস্ট দেখা হবে। তার চলাফেরা কাদের সঙ্গে, তারা কোন আদের্শ বিশ্বাসী, সেগুলোও দেখা হবে। কেউ যদি মনে করেন, তিনি আগের কোনো পোস্ট ডিলিট করে দেবেন, তাহলে সেটাও আরও বেশি সন্দেহের উদ্রেক করবে। নিষিদ্ধ কোনো সংগঠনের কাজে সমর্থন করলেও বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারেন।
মার্কিন সরকার সম্প্রতি স্টুডেন্ট ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের সবার জন্য বার্তা দিয়েছে। বার্তায় এফ, এম অথবা জে ভিসার জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়েছে, ভিসা আবেদনকারীদের ডিএস-১৬০ ভিসা আবেদন ফর্মে গত ৫ বছরে ব্যবহৃত সকল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারকারী নাম বা হ্যান্ডেল উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। আবেদনকারীরা তাদের আবেদনপত্রে দেওয়া সব তথ্য সঠিক ও সত্য বলে স্বীকার করে তবেই তা স্বাক্ষর করেন ও জমা দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য গোপন করলে ভিসা প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি ভবিষ্যতে ভিসা পাওয়ার অযোগ্যতা তৈরি হতে পারে।

কমেন্ট বক্স