ঠিকানা রিপোর্ট 
বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সৃষ্টিশীলতার আন্তর্জাতিক বিস্তারে আগামী ২৬ ও ২৭ জুলাই নিউইয়র্কের রকল্যান্ড কাউন্টির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা থ্রিফোল্ড কমিউনিটিতে আয়োজন করা হয়েছে ৩য় বার্ষিক রকল্যান্ড রিট্রিট ও বইমেলা। এই উৎসবের আয়োজক বেঙ্গলি ইন্টারন্যাশনাল লিটের্যারি সোসাইটি (বিলস)।
এবারের মেলার থিম নির্ধারিত হয়েছে ‘পিঠা’। বাংলা সাহিত্যে ও সংস্কৃতিতে পিঠার রূপ, রস ও তাৎপর্যকে ঘিরে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানসূচি। ২৫ জুলাই শুক্রবার আয়োজনের সূচনা হবে স্বেচ্ছাসেবক ও অনুদানদাতাদের জন্য এক আন্তরিক সংবর্ধনা ও নৈশভোজের মাধ্যমে।
১৩ জুলাই রোববার বিকালে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান, ২৬ জুলাই সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে উৎসবের মূলধারার কার্যক্রম। থাকবে গায়েনা মেলা, প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিটনেস ও স্ট্রেচিং সেশন, সৃজনশীল হাঁটা, মৌচাষের অভিজ্ঞতা, যোগাভ্যাস, খামার পরিদর্শন ও সাঁতারের সুযোগ। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে মূল সাহিত্য ও সংস্কৃতি উৎসব।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে থাকবেন বিলস-এর সভাপতি ড. ধনঞ্জয় সাহা এবং দাস ফ্যামিলি ফাউনেডশনের চেয়ারম্যান ড. শান্তনু দাস। যুক্ত হবেন অনুবাদ সাহিত্যিক ক্যারোলিন রাইট, বিদজা মুরালিধর, লিজি রহমান, দিলারা হাফিজসহ সাহিত্য ও শিল্প জগতের বিশিষ্টজনেরা। আরো অংশ নেবেন রকল্যান্ড পোয়েটস এবং এনডেভর ২১+ গ্রুপের অটিস্টিক তরুণ-তরুণীরা, যারা নিজেদের লেখা, সংগীত ও শিল্পকর্ম পরিবেশন করবেন।
থাকছে থ্রিফোল্ড দর্শনের খাদ্যভাবনা, পিঠা বিষয়ক আলোচনা, আর্ট থেরাপি, কবিতা পাঠ, ছোটগল্প উপস্থাপন, স্থানীয় লেখকদের বই ও হস্তশিল্প প্রদর্শনী এবং বহুভাষিক পোয়েট্রি স্লাম - যেখানে বাংলা, ইংরেজি, পোলিশ ও স্প্যানিশ ভাষায় পরিবেশিত হবে কবিতা।
সন্ধ্যার পর পরিবেশিত হবে গান, নৃত্য, কবিতা, শ্রুতি-নাটক এবং একটি মুক্ত মঞ্চে সবাই নিজের মত প্রকাশের সুযোগ পাবেন।
২৭ জুলাই সকাল ৯টায় শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের আয়োজন। লেখালেখি ও প্রকাশনা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেবেন ড. হাওয়ার্ড র্যাঙ্কিন ও রকল্যান্ডের কবি লরেট জুয়ান পাবলো মবিলি। নজরুল বিষয়ক সেশনে যুক্ত হবেন স্টিফেন ওয়াটস ও ডেভিড লি মরগান। শিশুদের জন্য থাকবে সৃজনশীল লেখালেখি সেশন ও প্রতিযোগিতা।
এদিন উপস্থিত থাকবেন লেখালেখির কোচ জেসিকা জুয়েল, ফকির ইলিয়াসসহ বহু প্রবাসী ও আন্তর্জাতিক লেখকগণ। থাকবে Endeavor 21+ I Music for Life-এর তরুণ-তরুণীদের পরিবেশনা। বরিন মুখার্জী আগের বছর তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন।
দুপুরের পর থাকবে নতুন বই পরিচিতি, পুরস্কার বিতরণী, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ঘরোয়া বারবিকিউ পার্টির মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই মিলনমেলা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র সংসদের সভাপতি ক্ল্যারা রোজারিও, সাধারণ সম্পাদক কল্লোল দাশ, উদীচী জামাইকা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিরো চৌধুরী, শিল্পকলা একাডেমি ইউএসএ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনিকা রায় চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা সুব্রত তালুকদার, লেখক ও নাট্যকার খান শওকত, কলামিস্ট ড. রফিকুল ইসলাম, খোরশেদ আলম খান, হেনা বেগম, হাফিজুর রহমান, কাজী মোস্তফা, মোল্লা মনিরুজ্জামান, অপরাজিতা চৌধুরী, ইসরাত বোখারীসহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনায় ছিলেন উত্তম কুমার সাহা ও বনানী সিনহা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন আবৃত্তিকার ও সাংবাদিক তাপস সাহা, কণ্ঠশিল্পী ও নারী উদ্যোক্তা গোপা পাল মুক্তা, কলামিস্ট ড. রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক ও আবৃত্তিকার সনজীবন সরকার, নাট্যকার খান শওকত, লেখক বনানী সিনহা ও সুমা রোজারিও। সংগীত পরিবেশন করেন রুনা রায়, লোকসংগীত শিল্পী শাহীন হোসেন এবং সম্মিলিতভাবে গান পরিবেশন করেন মনিকা রায় চৌধুরী, রুনা রায়, শাহীন হোসেন, গোপা পাল মুক্তা ও সুমা রোজারিও।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সংগঠনের সভাপতি ধনঞ্জয় সাহা এবং উপদেষ্টা ডা. অনিমিতা সাহা উপস্থিত সাংবাদিক ও অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান এবং উৎসবের বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
