এস আর শামস 
সম্প্রতি নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত আমেরিকান পুলিশ কর্মকর্তা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দিদারুল ইসলামের স্ত্রী জামিলা ইসলাম তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ১৭ আগস্ট (রবিবার) নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তাদের ঘরে তৃতীয় সন্তান জন্ম হয়। মা ও নবজাতক সুস্থ রয়েছে বলে জানা গেছে। পুত্র সন্তানের নাম রাখা হয়েছে আরহাম।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের প্রধান জেসিকা টিশ ১৮ আগস্ট (সোমবার) তার এক্স পোস্টে এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে এই পৃথিবীতে একটি নতুন জীবনের প্রবেশ ঘটেছে। গত রাতে, ডিডেক্টিভ ফার্স্ট গ্রেড দিদারুল ইসলামের স্ত্রী জামিলা ইসলাম তাদের সুন্দর পুত্র আরহামের জন্ম দিয়েছেন। আরহাম তার দুই বড় ভাই, অহিয়ান এবং আজহানের সাথে যোগ দিয়েছেন।’’
জেসিকা টিশ বলেন, ‘‘একইসাথে, তারা তাদের বাবার সেবা এবং সাহসের উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দিদার এই শহরকে যে নিষ্ঠা দিয়েছিলেন, সেই নিষ্ঠার সাথে NYPD সেই ঐতিহ্যকে রক্ষা করবে এবং সমুন্নত রাখবে। জামিলা, অহিয়ান, আজহান এবং এখন আরহাম চিরকাল নিউইয়র্ক পুলিশ পরিবারের অংশ থাকবে।’’
এদিকে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস সংবাদমাধ্যমকে জানান, রবিবার ইসলামের স্ত্রী যখন প্রসববেদনায় ভুগছিলেন, তখন তিনি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন।
মেয়র অ্যাডামস জানান, ‘‘এনওয়াইপিডির প্রয়াত ডিটেকটিভ দিদারুলের পরিবারের পাশে সবসময় থাকবে সিটি কর্তৃপক্ষ। তারা আমাদের পরিবার এবং এই মহান শহর, নিউইয়র্কের পরিবার।’’
উল্লেখ্য যে, গত ২৮ জুলাই নিউইয়র্ক সিটির ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউয়ের একটি বহুতলভবনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হওয়ার ২২ দিন পর দিদারুলের ঘরে তৃতীয় সন্তানের জন্ম হলো।
এদিকে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস দিদারুলের পরিবারের সাথে রবিবার রাতে হাসপাতালে সাক্ষাৎ করেছেন এবং নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন বলে দেশের একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার।
তিনি বলেন, এনওয়াইপিডির প্রয়াত ডিটেকটিভ দিদারুলের স্ত্রীর ও তাদের পরিবারের প্রতি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখানো হচ্ছে এবং আগামীতেও সিটি কর্তৃপক্ষ সবসময় তাদের পাশে থাকবে।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা নিহত দিদারুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৌর শহরের মাগুরায়। দিদারুল এনওয়াইপিডির ৪৭তম প্রেসিংকটে কাজ করতেন। তিনি এ বাহিনীতে সাড়ে তিন বছর কাজ করেছেন। গত ২৮ জুলাই নিউইয়র্ক সিটির ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউয়ের একটি বহুতলভবনে বন্দুকধারীর হামলায় চারজনের সঙ্গে দিদারুল ইসলাম নিহত হন।
পরবর্তীতে ৩১ জুলাই তাকে মরণোত্তর পদোন্নতি দিয়ে ডিটেকটিভ করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে নিউজার্সিতে দাফন করা হয়। নিহত দিদারুল স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে বসবাস করতেন।
ঠিকানা/এসআর
