যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে ইরান ‘কোনো তাড়াহুড়ো’ করছে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ২ অক্টোবর (রবিবার) আল জাজিরা আরবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরান এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে প্রস্তুত — তবে সেটি হতে হবে ‘সমতা ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে’।
আরাগচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে শর্তগুলো দিয়েছে (সরাসরি আলোচনা, শূন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা ও আঞ্চলিক মিত্রদের প্রতি ইরানের সমর্থন বন্ধ) সেগুলো ‘অযৌক্তিক ও অন্যায্য’।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তাড়াহুড়ো করছে না — আমরাও করব না।’
ইরানের শীর্ষ এই কূটনীতিক বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে এখন একটি আঞ্চলিক উপলব্ধি গড়ে উঠছে যে, আসল শত্রু ইসরায়েল, ইরান নয়।
আরাগচি বলেন, ‘আমি মাঝে মাঝে বন্ধুদের বলি, নেতানিয়াহু নিঃসন্দেহে যুদ্ধাপরাধী, তবে তিনি অন্তত একটা ভালো কাজ করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন যে পুরো অঞ্চলের মূল শত্রু ইসরায়েল, ইরান নয়।’
তার এই মন্তব্য এমন সময় এসেছে যখন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর বিন হামাদ আল-বুসাইদি বলেছেন, ‘আমরা বহুদিন ধরেই জানি— ইসরায়েলই এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতার মূল উৎস, ইরান নয়।’
ওমান বহু বছর ধরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু, আর্থিক ও বন্দি বিনিময় বিষয়ক আলোচনায় মধ্যস্থতা করে আসছে।
২০২৫ সালের জুন মাসে দুই দেশের মধ্যে ষষ্ঠ দফা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। ওই হামলায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ওমানের মাধ্যমে ইরানকে বার্তা পাঠিয়েছে। ইরানের সরকারপক্ষও বার্তা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে, তবে এর বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
আরাগচি বলেন, ইরানের প্রায় ৪০০ কেজি (৮৮০ পাউন্ড) ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রায় সবটাই ‘বোমা হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে’।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা সেটি তুলব না যতক্ষণ না উপযুক্ত শর্ত তৈরি হয়। এখনই বলা সম্ভব নয় কতটা অক্ষত আছে, কতটা নষ্ট।’
আরাগচি জানান, চীন ও রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে তারা জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞা স্বীকৃতি দিচ্ছে না।
অন্যদিকে, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি আলোচনা পুনরায় শুরুর আগ্রহ দেখালেও এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি হয়নি। বরং তারা ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ও ফ্লাইট সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
তবে সম্প্রতি কিছু ইউরোপীয় এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট আবার ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে। রোববার রাতে অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
জার্মানির লুফথানজা এয়ারলাইন্সও তেহরানে ফ্লাইট পুনরায় চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঠিকানা/এএস 
                           
                           
                            
                       
    
 
 


 ঠিকানা অনলাইন 
                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
                                                     
                                                
